জীবন থেকে তোমার অনাকাঙ্ক্ষিত প্রস্থান
আমার হৃদয় গহীনে; গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে,
সেই ক্ষতের ভিতরে লাল, নীল নানা রঙের কষ্ট।
তোমার স্মৃতিময় কষ্টগুলো পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে
ক্ষতের বিস্তৃতি হৃদয়টাকে প্রাণহীন করতে চায়।
গ্রীষ্মের তপ্ত তা পুড়িয়েছে ধরণী-
সেই তপ্ত আগুনে পুড়ে গেছে আমার ভালোবাসা,
সূর্যের তপ্ততায় ফেঁটে চৌচির হয়েছে বুকের জমিন।
একটু শীতলতার আশায় চারিদিকে খুঁজেছি তোমাকে-
কোথাও খুঁজে পাইনি, কারণ তুমি নেই।
এলো বরষা, শীতল হলো তপ্ত পৃখিবী,
বর্ষার জলে ধুয়ে নিল প্রকৃতির সমস্ত গ্লানি-
বন্যার জলে ভাসল ঘরবাড়ি-মানুষ সবই।
কিন্তু আমার হৃদয় আঙিনায় বসবাসকারী-
থিতু পোকা, ঘুগরি পোকা, ঝিঁঝিঁ পোকারা-
হৃদয় আঙিনায় গেজে ওঠা অপরিচ্ছন্ন তৃণলতা
কোনটাই ধুয়ে গেল না বন্যার জলে।
বরং আরও বেশি দুর্গন্ধ ছড়ালো আমার ভালোবাসায়।
হৃদয়ের কষ্টগুলো আরও দ্বিগুন হয়েছে,
কারণ আমার ভালোবাসা হারিয়ে গেছে,
কারণ তুমি নেই বলে।
এখন আমার মাথার উপর শ্রাবণের আকাশ
আকাশের নীল দিগন্ত জুড়ে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়,
কাশবনের ভালোবাসায় দুজনার ছুটোছুটি স্মৃতিতে অম্লান-
নদীর তীরে বসে গল্প করতে করতে সন্ধ্যা নেমে আসা,
তারপর আলো-আঁধারিতে হাত ধরে ঘরে ফেরা,
জুঁই, কাবেরী, কেয়া, মালতি আর কামিনী ফুলের গন্ধ
আজও বাতাসে ভেসে বেড়ায়, মাথার উপর দিয়ে-
এখনো উড়ে যায় টিয়া, বাবুই আর শালিকের দল,
ব্রহ্মপুত্র নদের পরিচ্ছন্ন নীল জলের উপর ভেঁসে বেড়ায় স্মৃতি ।
শ্রাবণের নির্মল স্নিগ্ধ প্রকৃতি সেই আগের মতই আছে-
তোমাকে এখনো খুঁজে ফিরি জীবনের ভাজে ভাজে।
চারিদিকে দৃষ্টি মেলে শুধু স্মৃতি দেখি, কেবল তুমি নেই পাশে।