আমাকে না ভালোবাসার অপরাধে
খুব শীঘ্রই, যত দ্রুত সম্ভব
তোমার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হবে।
মামলা হবে, হামলা হবে।
জেল, জুলুম, জরিমানা হবে।
খুব শ্রীঘ্রই
কোন প্রকার সমন ছাড়াই
একদল সশস্ত্র সেনা পাঠিয়ে তোমাকে গ্রেফতার করা হবে।
এক অসহায় প্রেমিককে অবজ্ঞা করার গুরুতর অপরাধে
তোমার ভ্রুবিভ্রমে পড়ে
এক অল্প বয়সী যুবকের খুন হয়ে যাবার জামিন অযোগ্য অপরাধে
আজ হাতে হাত কড়া পায়ে বেড়ী পরবে তোমার
শহরের প্রধান ফটকে তখন কারফিউ জারী হতে পারে।
ভীষণ ব্যস্ত শহরটাকেও
দু সেকেন্ডের নীরবতায় থামিয়ে দেয়া হবে।
তারপর আমারই গড়া স্বতন্ত্র আদালতে
রায় হবে, যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড।
দেহের অভ্যন্তরীণ কারাগারে তারপর চলবে তোমার কয়েদী জীবন।
এই দীর্ঘ কারা জীবনে তুমি পাবে
পানীয় জল হিসেবে আমার দেহের নর্দমায়
তোমার স্রোতে বহা ডেট এক্সপেয়ারেট রক্তসমুদ্র।
একফালি কেক হিসেবে পাবে
নিকোটিন পুড়ে যাওয়া বিদগ্ধ-যকৃত এক।
তারপর, তারপর আমার অন্তরদেহের সমস্ত অঙ্গ-প্রতঙ্গ
কতসব রঙিন প্লেকার্ডে আনন্দ শোভাযাত্রায় নামবে
তোমার দেহের অলিতে গলিতে-
"ভালবাসার অধিকার
কেউ পারে না রুখবার।"
"ভালবাসা অমর হোক
প্রেমিক হৃদয় শান্তি পাক।"
অতঃপর আমারই হৃদয়শ্রুতে গড়া ভরা পুকুরে
বেদনার স্নান শেষে তোমাকে নিয়ে যাওয়া হবে লকআপের ছোট জানালার ধারে
সেখানে একটি শূন্য আকাশ দেখিয়ে
তোমাকে বুঝানো হবে
চাঁদ-সূর্য ছাড়া আকাশ কতটা সংজ্ঞাহীন
মাটির বুকে বুক পেতে রাখা বৃক্ষরাজিকে দেখিয়ে বলা হবে 'সম্পর্ক' কী?
নিঃসঙ্গ এক জীবনের সঙ্গ না পাবার যন্ত্রনা কী?
অতঃপর, তারপর, শেষবারের মত তোমাকে প্রশ্ন করা হবে
আমার হৃদয়ের কারাঘরে
বিকল হৃদযন্ত্রটিসহ কতজন শ্রমিক তোমার সেবায় নিয়োজিত
টুয়েন্টি ফোর আওয়ার্স।
তারপর চৌদ্দবছর কেটে যাবে।
বুকের ঘাসে জমে ওঠা শিশির
তোমাকে ভালবাসা শেখাবে।