বাবা তুমি ছায়া হয়ে আছো বলেই তো,
নিজের মতো করে এখনো নিশ্চিন্তে দিন কাটাই।
তুমি আছো বলেই
এখনো বিকেলের সোনা ঝরা রোদের দেখা মিলে,
কখন যে গোধূলি পেরিয়ে সন্ধ্যায় হয় তা বুঝিনা।
রোজ সকালে বেরুনোর সময় কাউকে কীছু বলিনা,
পেছন থেকে সেই তুমি ডেকে বলো,
কী কারণে কোথায় যাচ্ছি আমি।
তুমি ছায়া হয়ে আছো বলেই তো
এখনো গভীর রাতের কৃষ্ণকালো আঁধারে বাড়ি ফিরি।
বাবা আমি জানি,
আমার অপেক্ষায় তুমি নির্ঘুম রাত কাটাও,
তবুও সূর্য ডুবার আগে আমার বাড়ি ফেরা হয়না।
আশ্চর্য ! তোমার ধমকের তোপ থেকে বাঁচতে
চুপি চুপি ঘরের বরান্দায় যখন আসি
কীভাবে যেন তুমি আমার জামার গন্ধ পেয়ে যাও,
সবার আগে তখন দরজাটা তুমিই খুলে দাও।
আজো আমি বাড়ি ফিরলে তবেই তুমি ঘুমাও।
মনে আছে বাবা,
সেই ছোট বেলায় তোমার কাঁদে চড়ে কত ঘুরেছি,
যা বায়না ধরেছি, তাই তুমি দিয়েছো
আজো দিয়েই যাচ্ছো।
তুমি আছো বলেই তো আমি সাহসী হয়ে ওঠি।
বিপদের পাহাড় ধেঁয়ে আসলেও বুক চেতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি।
আমি জানি এখনো কতটা আগলে রাখো ,
তাই তো আজো বিপদ মহাবিপদেও ভেঙ্গে পড়িনা।
প্রয়োজনে শহর-বন্দর গঞ্জে গেলে
সে আমি কীছু বলিনা!
তুমিই মুঠোফোনে বার বার কল দিয়ে জিজ্ঞেস করো
আমার কীছু লাগবে কীনা।
আমার বয়সের কোটা ত্রিশ পেরিয়েছে সেই কবে!
এখনো তুমি বটবৃক্ষের ন্যায় ছায়া হয়ে আছো।
আজো কাজের কাজ কিছুই করছি না,
ভবঘুরে পথিকের মতো ঘুরে বেড়াই
তবুও পরম যতনে বুকের মনিকোটায় আগলে রাখো।
আজো হেলায়-খেলায় দিন কাটে আমার।
মাঝে মাঝে নিজেকেই ভৎসা করি,
এখনো পরিবারের ঘানি তোমাকেই টানতে হচ্ছে কেন?
বাবা তুমি ছায়া হয়ে আছো বলেই তো এসব নিয়ে ভাবিনা।
পরিবারের খরচাদি, ঈদ এলে কেনাকাটা,
সংসারের আরো কতো টুকিটাকি -
বাবা তুমি ছায়া হয়ে আছো বলেই
এসব নিয়ে ভেবে দেখার ফুসরত পাই না।
বাবা তুমি আছো বলেই
আমি সে আগের মতোই আছি।