শরতের প্রথম দিনের প্রথম প্রভাতে
শিশির ভেজা দূর্বাঘাস মারিয়ে-
খালি পায়ে সবুজ ধান ক্ষেতের
আঁকাবাঁকা আলপথ ধরে তুমি -
হেঁটে আসছো ধরলা পাড়ে ।
প্রতিপ্রাতে তুমি এভাবেই আসো
তুমি আসবে বলেই -
অপেক্ষায় আছি নদী পাড়ে বসে
হৃদয়কাড়া তোমার হাসি মুখ দেখব বলে ।
তুমি আসো, নদী পাড়ে –
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকো এবং ফিরে যাও।
তোমার সাথে আমার কোন কথা হয় না,
তবুও আমি আসি,
তোমার প্রতিক্ষায় থাকি ।
অবশেষে তুমি এলে প্রতিদিনের মতোই,
তনু-মনে তোমার শিউলির সুবাস-
মুর্হূতেই ছড়িয়ে পড়ল চারিদিকে ।
নদীর পাড়ে এসে তুমি দাঁড়ালে,
এভাবেই প্রতিদিন দাঁড়িয়ে থাকো অনেকক্ষণ ।
যতক্ষণ নদীর স্বচ্ছ জলের উ্পর
আলোকরশ্মি ছড়ায়নি প্রভাতের লাল সূর্য ।
দূর্বা ঘাসের উপর সঞ্চিত শিশিরবিন্দু-
রুপালি মুক্তোর দানার মত ঝলমলে করে তোলে নি ,
ততক্ষণ তুমি দাড়িয়ে থাকো-
বিস্তীর্ণ স্রোতস্বিনীর পাড়ে।
তোমার মাথার চুল উড়ে নির্মল বাতাসে-
মাথার উপর ভেসে বেড়ায় একগুচ্ছ সাদা মেঘ ।
তুমি প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে দেখতে অন্যমনস্ক হয়ে যাও-
তোমাকে দেখে নদীর ওপারে-
বালুচরে হেসে উঠে কাশফুল,
বৈচিত্রময় শরৎ প্রকৃতিতে তুমি হারিয়ে ফেলো।
আামি তোমাকে যতই দেখি, ততই মুগ্ধ হই
তুমি আমাকে দেখো কিনা জানিনা ।
তুমি উপভোগ করো, প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্যকে ।
বালুচরের কাশফুল তোমাকে হাতছানি দিয়ে কাছে ডাকে-
নদীর জল পেরিয়ে তুমি যেতে পারোনা ওপারে ।
কিন্তু তোমার উচ্ছ্বসিত হৃদয় স্পর্শ করে কাশফুল ।
তুমি তখন তোমার কল্পনার আকাশে-
দৌড়ে বেড়াও-সাদা কাশফুল ছুঁয়ে ।
তোমার মাথার উপর দিয়ে উড়ে যায়
এক ঝাঁক শালিক কলকাকলির সুর বাতাসে তুলে ।
হঠাৎ তুমি আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়ালে ।
একগুচ্ছ শিউলি ফুল আমাকে দিয়ে বললে-
“আজ শরতের প্রথম প্রভাত, আপনাকে শরৎ শুভেচ্ছা” ।
মুখে তখন তোমার, জুঁই, কেয়া,মালতি আর কামিনি ফুলের
সুবাস ছড়ানো মিষ্টি হাসি, টানা টানা কাঁজল দুটি চোখ
আমার চোখের পাতা তখন আবিষ্ট । তারপর হঠাৎ-
হাতের চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ তুলে, দৌঁড়ে হারিয়ে গেলে
সবুজ ধান ক্ষেতের আঁকাবাঁকা আলপথ ধরে ।
সেই থেকে তুমি আমার হৃদয় রাজ্যে
ভালোবাসার শরৎরানী ।