যখন বেণী ছোট ছিল,
মুখে থাকতো হাসি,
চারিদিকে আমরা সবাই,
বেণীর পিসি মাসী।
আলতো আলতো বলতো কথা,
সবারই মনে,আছে গাঁথা।
তারপরে সে স্কুলে গেল,
পড়াশুনায় মন দিল।
বড় হয়ে বিলেত গেল,
বাবা তার,জমি বিকোল।
মা বলেন - "যা আছে,যাক-
ছেলে আমার প্রতিষ্ঠা পাক"।
বিলেতে সে ডাক্তার হলো,
দেশে এসে পসার জমালো।
বাবা-মা তার বিয়ে দিলো,
মনের সুখে সে সংসার পাতলো।
বছর দশেক পরের ঘটনা,
বৃষ্টি পড়ছিল, সেদিন একটানা।
"বাবার ভীষণ শরীর খারাপ" -
চিঠিটা পড়েই যে,তার বিরক্তিভাব।
গ্ৰামে কী আবার যেতে হবে!
কে জানে ক'দিন কাটাতে হবে?
দিবারাত্রি দেখে সে পয়সার আলো,
রোগীর ভিড় যে হেথা,বাড়ছে ভালো।
চিঠি কয়েক এল মা'র,
সময় যে আর,কাটেনা তার।
সব চিঠিতে একই কথা,
"বাবার সাথে কিছু সময় কাটা,
সে যে তোকে দেখতে চায়,
শেষ বেলাতে তাই,তুই আয়"।
বাড়ির চাকর ভজু-টাকে,
বেণী পাঠাল অবশেষে।
গ্ৰামে পৌঁছে দেখে ভজু,
সবাই কেমন কাঁচুমাচু।
বুঝতে ভজুর হয় না দেরি,
মা'র পরনে যে,সাদা শাড়ি।
চোখের কোনে পড়েছে কালি,
সজল নয়নে বললেন খালি -
"বাবার হাতের শেষ লেখাটা,
ডাক্তারকে দিস এই চিরকুট টা"
তাতে ছিল লেখা - "প্রিয় বেণী,
কোনও দিন আমি স্বপ্নে ভাবিনি,
করেছি নিজেকে সদা নিঃশেষ,
পসার হোক তোর,অপার অশেষ"।