বাজার করতে করতে রাকিব সাহেবের সাথে দেখা হলো বাড়ির পাশের ভিক্ষুক গরীবুল্লাহর সাথে। রাকিব সাহেব ইতোমধ্যে খরচের ব্যাগ একটা ভর্তি করেছেন। তিনি আরেকটি ব্যাগ ভর্তির জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
মি. রাকিব পেশায় বড় অফিসার হওয়ায় বাজারে তাঁর কদরও ভালো।
গরীবুল্লাহ রাকিব সাহেবকে রাকিবচা বলে ডাকে।
-রাকিবচা, কি কি কেনেন?
- অনেক কিছু ই।
-কিন্তু আপনে শুটক্যার দোকানের সামনে ক্যা?
- শুঁটকি কিনবো জন্যে!
- ক্যান? চাঁচির নাকি গোন্দো হয়?
( রাকিব সাহেব হাসলেন।)
- হা কিন্তু কাল তো পহেলা বৈশাখ। শুটকি ভর্তা দিয়ে পান্তা ভাত খেতে হবে।
- কি কন চাচা! আপনেরা পান্তা ভাত, শুটকি খাবেন?
- হুম, বাঙালির প্রাণের দিন এটি। তাই বাঙালির ঐতিহ্য অনুযায়ী এদিন পান্তা ভাত, শুটকি ভর্তা, পেঁয়াজ, ইলিশ মাছ ভাজি, শাটি মাছের ভর্তা, পাটশাক ভাজি সহ আরো যত বাঙালি খাবার আছে আর কি,সেগুলো খেতে হয়।
- ওহ! চাচা, একটা কথা কইতাম।
- ক।
-চাচা, যত খাবারের কথা কইলেন, ইলিশ মাছের কথা কয়া মোর মনোত খুব কষ্ট লাগাইলেন।
-কেন?
- আপনের নাতি-নাতনিরা কই যেন শুনছে কাল পহেলা বৈশাখ। ইলিশ মাছ খাওয়া লাগে। তাই ইলিশ মাছ খাওয়ার বায়না ধরেছে মোর কাছোত। কিন্তু মোর কি আর সেই সাধ্য আছে কন তো?
-হুম।
-চাচা কং কি! তোমার নাতি-নাতনী দুট্যাক যদি একটু..
-গরীবুল্লাহ, এগুলো আমি একদম পছন্দ করি না। ছাওয়ার এতো সোয়াং দেখিস ক্যান? তোর জীবন ক্যামনে চলে জানিস না?
রাকিব সাহেব গরগর করতে করতে সদর্পে চলে গেলেন। গরীবুল্লাহর চোখ ছলছল করছিলো। বাড়ির পাশের বড় অফিসার চাচাকে পেয়ে সে ভুলেই গেছে যে, তার নামের মধ্যেই ত তার জীবনের তাৎপর্য নিহিত আছে। হয়তো স্বল্প সময়ে আবেগে রাকিব চাচাকে নিজের মতো বাঙালি ভেবেছিল।
সূচিতে ফিরতে এখানে ক্লিক করুন।