আমার বিনিদ্র রজনী
তুমি কখনো দেখতে পাওনি,
আমার নয়নের অধ কৃষ্ণবর্ণ
কখনো তোমার দৃষ্টিগোচর হয়নি।
নিদারুন কষ্টগুলোকে বুকে অশ্ম বেঁধে
কার্তুজ করে আগলে রেখেছি,
তোমাকে বুঝতে দেইনি।
চাঁচল্যে ভস্ম হয়েছি সর্বদা
তবুও তোমাকে সঙ্গী করিনি।
তোমাকে অভিসন্ধি করে যে চিঠিটা লিখেছি
তাতেও কম কষ্ট হয়নি।
কী নির্মম পরিহাস,তুমি
আমার অনুভূতিকে কদর করো নি।
আমার ভালোবাসার বুহ্য রচনা যদি বুঝতে না' ই পারো
প্রিয়তম,তবে চিঠিটা ফিরিয়ে দিও।
তোমার নিরেট চিত্তকে আমি চিঠিতে
জলবৎ করার চেষ্টা করেছি,
সামান্য পাণ্ডিত্যের প্রকাশও ঘটিয়েছি,
ফলস্বরূপ অনুমাত্র লাভ করিনি।
চিঠিটা ক্ষুদ্রকায় হলেও
তোমার সৌন্দর্যের প্রকাশে কোনো কমতি রাখিনি।
আমার অন্তরের রোম দগ্ধ হলেও শুধু তোমার পানে তাকিয়ে
ক্ষিপ্তবৎ হয়ে নিরোর মতো বংশী বাজিয়েছি।
যুব সমাজ যখন নারী জাতিকে
কুহেলিকার প্রলেপ লাগাতে রত
সেক্ষেত্রে,তোমাকে স্বতন্ত্র আসন দিয়েছি।
কিন্তু এত সূক্ষ ভালোবাসা গ্রহনে তুমি অসমর্থ।
প্রিয়তম,তাই চিঠিটা ফিরিয়ে দিও।
তোমার মায়াবী চোখের কোটরে
আমি ক্লিওপেট্রার অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছি।
সামান্য এক প্রহর তোমার অঙ্গরহর দিকে তাকিয়ে,
আমি উর্বরশীকে আবিষ্কার করেছি।
তোমার অস্ফুট স্বরে বলা দু'একটা কথায়
আমি তোমার মাঝে কুষ্ঠরোগীর পত্নী
মহাশ্বেতাকে খুঁজে পেয়েছি।
তোমার ঋজু ও ধর্মনিষ্ঠায়
তোমাকে দ্রোপদী ভেবেছি,
তোমার সুপরিপক্ব ওষ্ঠাধর যুগলে
আমি যুবতী নারীর প্রেম কল্প করেছি।
তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসে এক অদ্ভুত অনুরক্তির
বিচলন প্রাপ্তির অভিরুচি পুষেছি।
আরও কত কী যে তোমাকে নিয়ে ভেবেছি,
চিঠিতে তা উত্থাপন করাই হয়নি।
এতকিছুর পরেও তোমার প্রস্তর দিলে
বিন্দুমাত্র স্থান লাভ করিনি।
কষ্ট নয় হাসি মুখে বলছি,
মনের মধ্যে কোনো ক্ষোভ-অভিমান রাখিনি,
আমার প্রণয় যদি তুমি বুঝতে না'ই পারো
প্রিয়তম,তবে চিঠিটা ফিরিয়ে দিও।