৮৩ তে পা দিলেন নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া


৮৩ তে পা দিলেন নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া। নিভৃতপল্লীতে থেকেও যে সাহিত্য চর্চা করা যায় তার অন্যান্য উদাহরণ নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া। সরকারি শহুরে চাকরি প্রত্যাখ্যান করে পেশা হিসেবে বেঁচে নেন গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকতা। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাত জেগে করেছেন অমর সৃষ্টি। শিক্ষকতা থেকে অবসরে গেলেও থামেনি লেখালেখি। এখনো তিনি লিখে যাচ্ছেন অবিরাম।

হায়দার বসুনিয়ার জন্ম ১৯৩৯ সালের ৩০ নভেম্বর কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার মনারকুঠি গ্রামে। পিতা পন্ডিত জসিম উদ্দিন বসুনিয়া, মাতা আছিয়া খাতুন।

তিনি নাজিমখাঁন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, কুড়িগ্রাম রিভার ভিউ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং গাইবান্ধা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ পাস করেন।
হায়দার বসুনিয়া এক্সসাইজ ইন্সপেক্টর, ডিআইটি পদে কর্মজীবন শুরু করলেও মা ও মাটির টানে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। সৎ জীবনযাপনের লক্ষ্যে যোগদেন নাজিমখাঁন জুনিয়র হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক হিসেবে। কিছুদিন শিক্ষকতার পর ময়মনসিংহ টি.টি কলেজ থেকে বিএড কোর্স শেষ করেন। আবারো সরকারি চাকরির হাতছানি আসলেও তিনি সেদিকে না ফিরে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী বহুমুখী হাইস্কুলে (উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ) সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে এমএড কোর্স সম্পন্ন করেন। উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা শেষে সেখান থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

তাঁর লেখায় পাওয়া যায় সাধারণ মানুষের দৈন্দিন ছুটে চলার গল্প, সমাজের গল্প, সামাজিকতার গল্প, আশা ও নিরাশার গল্প, ভালোবাসা ও হতাশার গল্প, মুক্তিযুদ্ধ ও মানবিকতার গল্প। এযাবৎ তিনি লিখেছেন ৫০ টিরও বেশি উপন্যাস। যার অর্ধেকই প্রকাশ পেয়েছে। নন্দিত হয়েছেন তিনি। জয় করে নিয়েছে পাঠকের মন। তিনি শুধু উপন্যাস লেখায় থেমে থাকেনি। লিখেছেন গল্প, কবিতা, নাটকসহ সাহিত্যের সকল শাখায়।

তার প্রকাশিত উপন্যাস নেপথ্যে লীলাময়, মেথর সমাচার, রাজাকারের মের্জাই বদল, দিগ্বিজয়ীর কান্না, হাতবদল, জালে ফেঁসেছিলো, পরী ডানাকাটা, সেতু, চলো যাই তেপান্তরের মাঠে, দুটো পোড়ো বাড়ির ইতিকথা, তুলো মনি, ভাগ্যান্বেষী ভবঘুরে, তিস্তা নদীর পাড়ে ও আপন মনের আরশি। কাব্যগ্রন্থ জেগে আছি, অমোঘ সায়াহ্ন, হংস সংলাপ ও রঙিন চশমা এবং ধর্মীয় প্রবন্ধের বই সিরাজম মুনিরা ও তাঁর উন্মতগণ উল্লেখযোগ্য।

বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন অরণ্য সম্মাননা ২০১৬, উলিপুর ডট কম সম্মাননা ২০১৭, ছোটনদী লেখক সম্মাননা ২০২১। 

নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়ার ৮২ তম জন্মদিনে বর্ণপ্রপাত'র পক্ষ থেকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি। 

জরীফ উদ্দীন, সম্পাদক, বর্ণপ্রপাত।

Post a Comment

মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।

Previous Post Next Post

আপনিও লেখুন বর্ণপ্রপাতে

ছড়া-কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ( শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, দর্শন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও প্রবন্ধ), উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, গ্রন্থ ও সাহিত্য পত্রিকার আলোচনা ও সমালোচনা, চিঠি, সাহিত্যের খবর, ফটোগ্রাফি, চিত্রকলা, ভিডিও ইত্যাদি পাঠাতে পারবেন। ইমেইল bornopropat@gmail.com বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।