পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস যেন এক গৌরব দীপ্ত অধ্যায়। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে তিরিশ লাখ মানুষের প্রাণ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বর পেয়েছি বাংলার আকাশে মুক্ত নিশান উড়ার অকৃত্রিম স্বাদ।বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক যে নতুন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিলো,এ বছর বিজয়ের ৫১তম বর্ষপূর্তি উদযাপিত হবে। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের আয়তন বিশিষ্ট এশিয়ার দক্ষিণে অবস্থিত বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে যাওয়া মানুষটির নাম 'শেখ মুজিবুর রহমান'।পারিবারিক ভাবে আদর করে ডাকতো 'খোকা',জনগণের কাছে ছিলো'বঙ্গবন্ধু',আবার কেউ বলতো'স্বাধীনতার মহানায়ক', আমেরিকার নিউজউইক ম্যাগাজিন স্বীকৃত 'রাজনীতির কবি', সংবিধান স্বীকৃত জাতির পিতা হিসেবে।এছাড়াও ২০০৪সালের বিবিসি বাংলার জরিপে বঙ্গবন্ধুকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে নির্বাচিত করে।এই বিস্ময়কর, ১৯২০সালের ১৭ই মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করে।ছোটবেলা থেকেই তাঁর হৃদয়টা ছিল উদার প্রকৃতির। মানুষকে ভালোবাসার ইতিহাসটা ছোটবেলা থেকেই। আমি রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র হিসেবে যতটুকু ইতিহাস পড়েছি ।বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর মতো এত অগ্রণী ভূমিকা আর কোনো নেতা রাখেনি। বঙ্গবন্ধু তাঁর আয়ুষ্কালের ৫৫ বছরের প্রতিটি মুহূর্তে ব্যয় করেছেন বাঙ্গালি জাতির মুক্তির সংগ্রামে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালি জাতিসত্তা, স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশ যেনো এক ও অভিন্ন। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশে ঐতিহাসিক যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা রয়েছে, প্রতিটি ঘটনার মূখ্য চরিত্র বঙ্গবন্ধু। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন; ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের সাধারণ নির্বাচন; ১৯৬২ সালে শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন; ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন; ১৯৬৮ সালের আগরতলা মামলা; ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান; ১৯৭০ সালের নির্বাচন; ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ; ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা; দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের মাধ্যমে বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ—যার পুরোটাই বঙ্গবন্ধুময়। স্বাধীনতা-পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো যুদ্ধবিধ্বস্ত, ভৌত-অবকাঠামোহীন বাংলাদেশকে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের কিন্তু তা কণ্টকাকীর্ণ, বিপদসংকুলও ছিলো বটে।কেননা,রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ,যানবাহন,বিদ্যুৎ,অসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো-সবকিছুই বিনষ্ট। অন্যদিকে বিশ্বমন্দা ও নানা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে সামাজিক অস্থিরতা বিরাজ করছিলো। এর মধ্যে ১৯৭৫সালের ১৫ই আগস্ট একদল দুষ্টচক্রের দ্বারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বাদ যায় নি দশ বছরের শেখ রাসেলও।তবে ঐদিন আল্লাহর অশেষ রহমতে বেচে যায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য দুই কন্যা শেখ হাসিনাও শেখ রেহানা।
জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছেন তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা বলেছিল—আগামী ১০০ বছরের মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার ছাড়াবে না।বিস্ময়চিত্তে দেখি , মাত্র ৫০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অথচ ১৯৭০-এ মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১৪০ ডলার। হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ৫০ বছরে বাংলাদেশ নামক ঝুড়িটি আর তলাবিহীন নয়; ঝুড়ি এখন সাফল্যে পরিপূর্ণ ।তদুপরি, জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে সাবেক মহাসচিব বান কি মুন পৃথিবীর সকল উন্নয়নশীল দেশকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন -"আপনারা যদি উন্নয়নের কোন ধারাকে রোল মডেল হিসেবে নিতে চান তাহলে বাংলাদেশকে দেখুন,বাংলাদেশের উন্নয়নকে দেখুন"। মহামারি করোনাকালীন সময়ে বিশ্বের সব দেশে যখন প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.২ শতাংশ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জিত হতে পারে। করোনাকালীন কঠিন সময়েও বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ -এ ১৭৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এছাড়াও প্রবৃদ্ধির অর্জিত হয়েছে ৫.২৪ শতাংশ যা আশাব্যঞ্জক ঘটনা। ১৯৭২-১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা অথচ জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬লাখ ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮১ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যাও। স্বাধীনতার পর রপ্তানি আয়ের সত্তর ভাগ ছিল পাটের দখলে। বর্তমানে মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক খাতের দখলে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভিশন ২০২১ দিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন যার মধ্য দিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশ উন্নিত হয়েছি এবং ভিশন ২০৪১ এর মাধ্যমে আমরা আধুনিক এবং উন্নত দেশে পরিণত হব। বাংলাদেশ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, বড় বড় ফ্লাইওভার করা হয়েছে, মেট্রোরেল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে,সারা দেশজুড়ে রাস্তাঘাট কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে, দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ নিজস্ব অর্থায়নে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচক ও জরিপে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।শোষিত,নিপীড়িত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের মুক্তি এবং দেশ ও জনগণের উত্তম সেবা,তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং বহির্বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৪০টির বেশি আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। একজন বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের, সম্মানের।
তবে এতসব অর্জনের বিপরীত দিকে চিত্র সুখকর নয়:অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবনতি ঘটেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলো শক্তিশালী হওয়ার পরিবর্তে দুর্বল হয়েছে, ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতের অবনতি,নাগরিক স্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বহুলাংশে খর্বিত।মূলত রাজনৈতিক অঙ্গীকারের দুর্বলতার কারণে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পথে ;যার ফলে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে দুর্নীতি,অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের অভাবে খুন, ধর্ষণ ক্রমশ বেড়েছে। বিশেষত, নারীর প্রতি সহিংসতা গুরুতরভাবে বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে। ভুলে গেলে চলবে না,বঙ্গবন্ধর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল দল,মত,ধর্ম-বর্ণ,নির্বিশেষে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। দেশের বর্তমান সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।
পরিশেষে,বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ও চলমান মুজিববর্ষে দাড়িয়ে শপথ করি এ দেশ আমার। এদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। সকল ভেদাভেদ ভুলে, দল, মত,ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকলে যে যেখানেই আছি, সেখান থেকে দেশের জন্য সর্বোচ্চটুকু করবো।এই দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার বদ্ধ হই সবাই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে শুধু আত্মপ্রচারমূলক স্মৃতিচারণায় পর্যবসিত না করে আমাদের প্রতীক্ষা হোক শতবর্ষে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক ও উন্নত রাষ্ট্র।
মো. মারুফ মজুমদার
শিক্ষার্থী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম
লেখক ফোরাম,চবি শাখা।
জাতির পিতার অসমাপ্ত স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছেন তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা বলেছিল—আগামী ১০০ বছরের মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার ছাড়াবে না।বিস্ময়চিত্তে দেখি , মাত্র ৫০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। অথচ ১৯৭০-এ মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১৪০ ডলার। হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ আখ্যায়িত করেছিলেন। কিন্তু অতি আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ৫০ বছরে বাংলাদেশ নামক ঝুড়িটি আর তলাবিহীন নয়; ঝুড়ি এখন সাফল্যে পরিপূর্ণ ।তদুপরি, জাতিসংঘের ৭০তম অধিবেশনে সাবেক মহাসচিব বান কি মুন পৃথিবীর সকল উন্নয়নশীল দেশকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন -"আপনারা যদি উন্নয়নের কোন ধারাকে রোল মডেল হিসেবে নিতে চান তাহলে বাংলাদেশকে দেখুন,বাংলাদেশের উন্নয়নকে দেখুন"। মহামারি করোনাকালীন সময়ে বিশ্বের সব দেশে যখন প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে, তখন বাংলাদেশে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.২ শতাংশ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জিত হতে পারে। করোনাকালীন কঠিন সময়েও বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ -এ ১৭৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এছাড়াও প্রবৃদ্ধির অর্জিত হয়েছে ৫.২৪ শতাংশ যা আশাব্যঞ্জক ঘটনা। ১৯৭২-১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা অথচ জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬লাখ ৩ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকার বাজেট সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮১ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে বেড়েছে রপ্তানি পণ্যের সংখ্যাও। স্বাধীনতার পর রপ্তানি আয়ের সত্তর ভাগ ছিল পাটের দখলে। বর্তমানে মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক খাতের দখলে।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ভিশন ২০২১ দিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন যার মধ্য দিয়ে আমরা উন্নয়নশীল দেশ উন্নিত হয়েছি এবং ভিশন ২০৪১ এর মাধ্যমে আমরা আধুনিক এবং উন্নত দেশে পরিণত হব। বাংলাদেশ অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে, বড় বড় ফ্লাইওভার করা হয়েছে, মেট্রোরেল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে,সারা দেশজুড়ে রাস্তাঘাট কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে, দেশের সর্ববৃহৎ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ নিজস্ব অর্থায়নে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কৃষি, খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়ন, আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচক ও জরিপে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।শোষিত,নিপীড়িত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের মুক্তি এবং দেশ ও জনগণের উত্তম সেবা,তাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং বহির্বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ৪০টির বেশি আন্তর্জাতিক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। একজন বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের, সম্মানের।
তবে এতসব অর্জনের বিপরীত দিকে চিত্র সুখকর নয়:অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবনতি ঘটেছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গুলো শক্তিশালী হওয়ার পরিবর্তে দুর্বল হয়েছে, ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে নির্বাচন ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাতের অবনতি,নাগরিক স্বাধীনতা, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা বহুলাংশে খর্বিত।মূলত রাজনৈতিক অঙ্গীকারের দুর্বলতার কারণে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পথে ;যার ফলে সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে দুর্নীতি,অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের অভাবে খুন, ধর্ষণ ক্রমশ বেড়েছে। বিশেষত, নারীর প্রতি সহিংসতা গুরুতরভাবে বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে। ভুলে গেলে চলবে না,বঙ্গবন্ধর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল দল,মত,ধর্ম-বর্ণ,নির্বিশেষে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে। দেশের বর্তমান সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া জরুরি।
পরিশেষে,বিজয়ের মাস ডিসেম্বর ও চলমান মুজিববর্ষে দাড়িয়ে শপথ করি এ দেশ আমার। এদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। সকল ভেদাভেদ ভুলে, দল, মত,ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সকলে যে যেখানেই আছি, সেখান থেকে দেশের জন্য সর্বোচ্চটুকু করবো।এই দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার বদ্ধ হই সবাই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে শুধু আত্মপ্রচারমূলক স্মৃতিচারণায় পর্যবসিত না করে আমাদের প্রতীক্ষা হোক শতবর্ষে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে একটি আদর্শ গণতান্ত্রিক ও উন্নত রাষ্ট্র।
মো. মারুফ মজুমদার
শিক্ষার্থী, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
সদস্য, বাংলাদেশ তরুণ কলাম
লেখক ফোরাম,চবি শাখা।