প্রাক্তন বনে যাওয়া বর্ষার সিক্ততায় যখন হিজলের পাতার কোণটা এখনো একটু আধটু ভিজে রয়,তখন শহরের কোল ঘেঁষে ভাদ্র আশ্বিন মাসে ধরায় হেসে উঠে উঁকি দেয় সদ্য প্রস্ফুটিত যৌবনমুখর শরৎকাল।
বর্ষার রিক্ত শুন্যতায় জরাজীর্ণ মানব শরীরের মস্তিষ্ক জুড়ে যখন বাসা বেঁধেছে অবসাদ ক্লান্তির সঙ্গতা। তখন আগন্তুক বেসে সুযোগ বুঝে ফুলে ফুলে সেজে হেসে উঠে শরৎতের নৃত্যসাজ।
কি ভীষণ উদারতা, শান্ত স্নিগ্ধতা ; যেন প্রেয়সীর হৃদয়কাড়া হাসির মতোই শুভ্রতায় ছাওয়া একগুচ্ছ কাশফুল।
শিশির ভেজা শিউলি ফুলের অনুপম সাথে সন্ধি মিলিয়ে লেপ্টে থাকে দূর্বাঘাসের ভাঁজে শরৎরাণীর পরম পরশ।
যেন বিস্তৃত পৃথিবীর সীমারেখা জুড়ে এক শরৎউৎসবই মাত্র ঠাঁই করে নেয় শতযুগ থেকে শত শতাব্দী অন্তর।
আকাশ ঘেঁষে শুভ্র কেশের ন্যায় বয়ে চলে সাদা মেঘপুঞ্জ সারি সারি, আকাশের অসীমরেখায় বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় তারা যেন একচ্ছত্র অধিপতি।
সময়ে ফাঁকে টুপটাপ বৃষ্টির আনাগোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়া এক যুগল শালিকের কন্ঠে তখনো ভাসে শরৎরানীর বিণার মূর্ছনা।
কবি গুরুর ভাষায় সুর মিলিয়ে বলতেই হয়, " আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ আমরা গেঁথেছি শেফালির মালা, নবীন ধানের মঞ্জুরি দিয়ে সাজিয়ে এসেছি ডালা।
এসো গো শরৎ লক্ষী তোমার শুভ্র মেঘের রথে, এসো নির্মল নীল পথে।