মে দিবসের অভিজ্ঞতা
সকালবেলা বুয়া এসে বানাচ্ছিল রুটি,
ডেকে বলি, 'বুয়া, তোমার আজ পুরোদিন ছুটি।
আজকে তোমার কাজ বন্ধ, ঘুরবে সারা ঢাকা,
এই যে, ধরো, ঘোরার জন্য দিলাম কুড়ি টাকা।'
আজ সারাদিন শ্রমিক দিবস—বুয়া কি তা জানে?
খায় না ওটা মাথায় লাগায়—বোঝে কি তার মানে?
ফ্যালফেলিয়ে তাকিয়ে থাকে—কী জানি কী ভাবে।
ধমকে বলি, 'যাও তো, বুয়া—ঘুমোব আজ—যাবে?'
বলল বুয়া, 'যাই, ভাইজান, আলু ভাজি হোক।'
কাজ ফেলে কি কাজের বুয়া ঘুরতে যাবার লোক?
ভাজল আলু, ডিম, পরাটা, করল দু‘কাপ চা-ও
বলি তাকে, 'খুব হয়েছে, যাও তো এবার, যাও!'
সোজা কথায় কাজ হলো না, বের করে দেই বকে,
বোকার মাথায় সোজা কথাও ধমক দিলেই ঢোকে।
সটান হয়ে শুয়ে পড়ি সোফার পরে আমি,
অফিস করা লোকরা জানে ঘুম কী রকম দামি।
হাত-পা ছেড়ে ঘুমোব আজ—ঘুমের ঘনঘটা,
কাল থেকে ফের অফিস আছে ন‘টা থেকে ছ‘টা।
ঘুমের ভারে শরীর অবশ, ক্লান্ত দু‘চোখ বোজা,
খুট করে এক আওয়াজ শুনে কানদুটো হয় সোজা।
এই ঘরে না। ওই ঘরে না। সোফার নিচে?—না-না,
থেমে থেমে হচ্ছে আওয়াজ, হচ্ছে না একটানা।
আওয়াজ বোধহয় মেইনডোরে হয়, দরজা খুলে দেখি,
কাজের বুয়া দাঁড়িয়ে আছে, যায়নি কোথাও, সে কী!
টেনশনে তার কপাল ও গাল ভিজে গেছে ঘামে,
বলল ভয়ে, 'কাইলকা থিকা, আসমু না আর কামে?'