খোকার খেলা
খোকন সোনা নিজের মত বইটা হাতে ধরে
সকাল সাঁঝে নিয়ম করে একাই বসে পড়ে।
নিত্য লেখে হাতের লেখা খাতার পাতা ভরে-
নিত্য আঁকে আবার মুছে আঁকে নূতন করে।
তার আকাশে সূর্যি আঁকে সোনালী রঙ ঢেলে
নিজের আঁকা ছবির সাথে যাচ্ছে খেলা খেলে।
দিন কাটে যে এমন করে দিনের পরে দিন-
খোকার কাছে এসব খেলা চলে বিরামহীন।
আঁকছে ছবি খেলছে খেলা নিয়ম করে রোজ
জানার পরে পাড়ার সবে নিচ্ছে সেটা খোঁজ।
তার খেলা যে সবার মাঝে ভীষণ প্রিয় হলো-
পাড়ার যত খোকার সাথি করছে সবে ফলো।
ফুরোয় না তো খোকার খেলা দিন ফুড়িয়ে রাত
খেলছে খেলা খোকারা সব, করছে বাজিমাত-
সকাল সাঁঝে মিলছে সবে, খেলায় ওঠে মেতে
এমন খেলা রেখে কেউ তো চায়না বাড়ি যেতে।
সেই খেলাতে ভীষণ মজা, খেলছে যারা জানে
আমরা কেন খুঁজছি মিছে সেই খেলার মানে!
ভাল্লাগেনা
অনেক কিছু ভাল্লাগেনা বাড়ছে যত দিন
এখন আমি হচ্ছি না কি! খুবে বুদ্ধিহীন
এসব কিছু মায়ের কথা, তোমরা কে কি বলো?
ভালো ছেলের মতন হতে করব কি কি ফলো!
সকাল সাঝে পড়তে বসি, স্কুলেও যাই রোজ
আর করিনা আগের মত শালিক ছানা খোঁজ
আর ছুটি না আগের মত কদম কেয়া বনে-
ভালো হওয়া খুব বাসনা পোষণ করি মনে।
একটুখানি ভুলের জন্য মায়ে ভীষণ রাগে
সত্যি বলছি আমার কাছে অন্য রকম লাগে।
তখন কিছু ভাল্লাগেনা পড়ি না আর বই-
নিজকে নিয়ে ভাবনা শুধু, একলা বসে রই।
ভাবিনা আর আগের মত অন্য কিছুর কথা
তখন আমি একলা থাকি, মেজাজ যথা তথা।
একলা থাকি একলা ভাবি কেমনে ভালো রই
খানিক পরে সবটা ভুলে আগের মত হই।
ভাবছ বুঝি আমার কথা, কেমন ছিল আগে?
পাড়ায় যত ভালো-মন্দ সবে আমার ভাগে
ভালোর চেয়ে খারাপগুলো আসতো শুধু ধেয়ে
দুষ্ট ছেলে উঠত ধেয়ে আমায় সাথি পেয়ে।
স্বাধীন হলো দেশ
আগুন হয়ে দ্বিগুন ফোটে ভাঙে সকল তালা।
উঠল জেগে বাঙালী আর অস্ত্র নিল হাতে-
পণ করলো স্বাধীন হবে, যুদ্ধ দিনে-রাতে।
যুদ্ধ চলে দীর্ঘ ন'মাস জীবন বাজী রেখে-
স্বাধীন হবে সেই বাসনা ধরে তখন জেকে
নদীর জলে রক্ত স্রোত গগন জুড়ে ধোঁয়া
কারো স্বজন আবার কেউ নিজে যাচ্ছে খোয়া।
জীবন দানে নয় তো ভীরু নয় পিছুপা কভু
দেশের জন্য মরণ হবে! যুদ্ধ চালায় তবু-
স্বাধীন হবে এই বাসনা স্বপ্ন হলো বড়-
স্বাধীনতার যুদ্ধে সবে; অস্ত্র হাতে ধরো।
যার যা আছে নিলেন হাতে যুদ্ধ চলে বেশ,
পরাধীনতা শিকল ভেঙে স্বাধীন হলো দেশ।
স্বপন শর্মা রচিত বইটি পেতে যোগাযোগ করুন 01737549631 |
ফাগুনের কথা
শীতের শেষে ফাগুন এসে, শিমুল বনের বাঁকে
ঘুমে ছিল কোকিল পাখি জাগিয়ে দিল তাকে।
পলাশ তলায় পলাশ ফুলে; রাঙা সকাল সাঁঝে
ব্যাকুল হলো ভোমর পরাণ মধু নেবার কাজে।
শিমুল ফোটে, কৃষ্ণচূড়াও নানা জাতের ফুল-
কোকিল এলো সাথে ভোমর দু'য়ে হয় মশগুল
গাছের ডালে নতুন পাতা আম কাঁঠালি ফুলে
গন্ধে আকুল রাতের বেলা বাদুড় থাকে ঝুলে।
বাদুড় ঝোলা সকাল বেলা ভীষণ মায়া-ময়
সূর্য্য উপর উদাস দুপুর ভয়কে করল জয়;
বাঁশের বনে পাখির মনে ভাঙ্গল নিরবতা-
বসন্ত আর ঘুঘু পাখি; কয় ফাগুনের কথা।
কোকিল যখন গেয়ে ওঠে সে অজানা গান
শিমুল বনে পলাশ বনে; বসন্তের কী টান!
বাঁচার আশা ফিকে
যায়না দেখা দুই নয়নে তবু ভীষণ জোর
থাকুন যত ঘরের মাঝে আটকে দিয়ে দোর
যায় না তবু আটকে রাখা জীবানু ভাইরাস
হাজার শত বাঁধলেও হবে, প্রাণটা মাইনাস।
রাখছি ঢেকে মাস্কে করে নিজের গোটা মুখ
বাঁচার জন্য দেহের মাঝে নিচ্ছি কত ফুঁক?
এতো কিছুর পরে যখন পাইনা উপকার-
ভাবছি কত হাজার বারে নামটা জপি তার।
এখন এটা প্রতিষেধক; করোনা ভাইরাসে
কত ধরণ টোটকা নীতি গুজব হয়ে ভাসে
কোনটা বাজে কোনটা কাজে বলাটা মুশকিল
মরলে পঁচা বাঁচলে তবে শান্তি করি ফিল।
হায় করোনা কত ধারণা বাঁচার জন্য দিলে
বিজ্ঞানেতে পাইনা খুঁজে মরছি তিলে তিলে
প্রমাণ হলো মানুষ জ্ঞানে অতি-নগণ্য ঠিকে
হাজার শত কৌশলে আজ বাঁচার আশা ফিকে।
শেখ মুজিবের ছবি
খোকা খুকি নেয় খোঁজ
খেলা ঘরে দেখে রোজ
আধা ঝুলে আধা খুলে
দেয়ালের ছবিগুলো-
সব কিছু এলোমেলো
লেগে আছে মাটি ধুলো।
দেয়ালের সব ছবি
কেউ নেতা কেউ কবি
ঝেড়ে মুছে তুলে রাখে
চোখ যায় যতো দূর
চেয়ে দেখে তবু ঘর
আঁধারেতে ভরপুর।
তার পর হাতে করে-
খোকা নিয়ে এলো ঘরে
ঘরে যেন জ্বলে ওঠে
আঁধারে আলোর রবি
খোকা-খুকি চেয়ে দেখে
শেখ মুজিবের ছবি।
ইচ্ছে ঘোড়া
ইচ্ছে হলে হাতটি ধরো আবার ছেড়ে দাও
হয়না পুরো ইচ্ছেগুলো যখন যেটা চাও!
ইচ্ছে সবে পূরণ হবে হাতটি যদি ধরো-
ইচ্ছে ঘোড়া এখন আমি ইচ্ছে মত চড়ো।
ইচ্ছে মত টগবগিয়ে যেথায় খুশি চলো
ইচ্ছে মত লাগাম টেনে ইচ্ছেগুলো বলো
ইচ্ছে হলে ছুটতে থাকো দূরের কোনো মাঠে
ইচ্ছে হলে রাখবে বেঁধে ছোট নদীর ঘাটে।
ইচ্ছে যত আমায় বলো মনের অভিলাষ-
ইচ্ছে মত আমার মাঝে করো সদায় বাস
আমি তোমার ইচ্ছে ঘোড়া চালাও খুশি মতো
তোমার কত ইচ্ছে আছে হাজার না কি শত!
ইচ্ছে যত হাজার শত সবে পূরণ, তবে-
আমি তোমার ইচ্ছে ঘোড়া তুমি আমার হবে
ইচ্ছে ঘোড়া লাগাম ছাড়া ছুটবে দূর দেশে
ঘোড়ার পিঠে উঠবে তুমি চলবে হেসে হেসে।
স্বপন শর্মা
উলিপুর, উলিপুর।
মোবাইল: 01737549631