প্রকৃতির শিক্ষা ।। মো. সাজ্জাদ হোসেন


“প্রকৃতি যে দরজা খুলে দিয়েছে, এ ছাড়া আর কোন দরজা নেই জ্ঞান রাজ্যে পৌঁছবার; প্রকৃতির যে সত্য খুঁজে পাওয়া যায়, এর বাইরে আর কোন সত্য নেই।” বলেছেন লুথার বারব্যাঙ্ক। 
মহান সৃষ্টিকর্তার অপরুপ সৃষ্টি হলো আমাদের পৃথিবী। পৃথিবী নামক এই গ্রহে মনুষ্য জাতির সাথে বসবাস করে চলেছে পশু,পাখি,গাছপালা,জীব,জন্তু,জলজ ও স্থলজ নানা উদ্ভিদ। সৃষ্টি জগতের সকল প্রাণীকূলের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সেরা জীব হলো মানুষ। মানুষের মেধা বুদ্ধি ও দর্শনীয় চেহারা সমস্ত সৃষ্টি জগতের অন্যান্য প্রাণী থেকে আলাদা। মেধা বুদ্ধি দিয়ে মানুষ বিশ্বজগতকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। মানুষের গবেষণালব্ধ জ্ঞান সমুদ্রের তলদেশ থেকে গ্রহ নক্ষত্র পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। 
মানুষ জীবন ধারণের পাশাপাশি আরাম আয়েশের জন্য প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। প্রকৃতিও মানুষের বশ্যতা স্বীকার করে নিয়েছে। প্রকৃতি নিজেদেরকে উজাড় করে দিয়েছে মানুষের কল্যাণে। মানুষ বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন, পানি, খাদ্য,বস্ত্রসহ সবকিছুই প্রকৃতি থেকে গ্রহণ করে। প্রকৃতি তার সবকিছুই উদার হস্তে দান করে চলেছে। মানুষের ভালো থাকার মাঝেই প্রকৃতি আত্মতৃপ্তি অনুভব করে। 
প্রকৃতি সব সময় মিলেমিশে থাকে। প্রকৃতি নিয়ম মেনে চলে। প্রকৃতি অসম প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়না। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রকৃতির নিয়মের পরিবর্তন ঘটে। প্রকৃতির নেই কোন লোভ,নেই কোন হিংসা বিদ্বেষ। অন্যের ক্ষতি সাধনের চিন্তা প্রকৃতি কখনও করেনা। প্রকৃতি সব সময় সাম্যের নীতিতে বিশ্বাসী। প্রকৃতি হানাহানি মারামারি করেনা। প্রকৃতি কাউকে বঞ্চিত করেনা,কারও অনিষ্ট সাধন করেনা। প্রকৃতি সমবন্টন নীতিতে বিশ্বাসী। প্রকৃতি মানব কল্যাণের জন্য সব সময় সৃষ্টিকর্তার কাছে জিকির করে। প্রকৃতি নিতে জানেনা,দিতে জানে। ত্যাগই হলো প্রকৃতির ধর্ম।
 ফ্রান্সিস বেকন বলেছেন-“ প্রকৃতির আইন সর্বক্ষেত্রেই মানব কল্যাণের জন্য নিবেদিত।”

আমরা প্রকৃতির সমস্ত সেবা মনের আনন্দে গ্রহণ করি। ধনী, গরীব, শিক্ষিত, অশিক্ষিত আমরা সবাই প্রকৃতির সেবা গ্রহণ করছি। সবাইকে সমানভাবে প্রকৃতি তার সেবা দিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতি সর্বজনীন। প্রকৃতি কাউকে বঞ্চিত রাখেনা। প্রকৃতির নিজস্ব কোন ধর্ম নেই। প্রকৃতির একটাই ধর্ম, সেটা হলো সকলের কল্যাণ। 
প্রকৃতি থেকে লব্ধ জ্ঞান আমরা প্রকৃতি ধ্বংসের কাজে ব্যয় করছি। মানুষ হয়ে মানুষকে হত্যা করছি। মিলেমিশে থাকার নীতি আমরা ভুলে যাচ্ছি। আমরা গ্রহণ করেছি হিংসা বিদ্বেষের নীতি, আমরা গ্রহণ করেছি জবর দখলের নীতি, বোমা মেরে মানুষ হত্যার নীতি।

প্রভাষক, লাউর ফতেহ্পুর ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ কলেজ
নবীনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

Post a Comment

মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।

Previous Post Next Post

আপনিও লেখুন বর্ণপ্রপাতে

ছড়া-কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ( শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, দর্শন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও প্রবন্ধ), উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, গ্রন্থ ও সাহিত্য পত্রিকার আলোচনা ও সমালোচনা, চিঠি, সাহিত্যের খবর, ফটোগ্রাফি, চিত্রকলা, ভিডিও ইত্যাদি পাঠাতে পারবেন। ইমেইল bornopropat@gmail.com বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।