আমাদের শৈশব, বৃদ্ধ বয়সের সবচেয়ে সুন্দর একটি স্মৃতি হিসেবে থাকে। ছেলেবেলায় সুন্দর একখানা সবুজ ঘাসের চাদরে ডাকা মাঠ, খেলাধুলা আর পুকুরে সাঁতরানো দিন গুলো, মায়ের বকুনি, স্কুল পালানো দিন, আমতলা জামতলায় ঘুরে বেড়ানো দিন। বিকেল হতে সন্ধ্যে না হওয়া পর্যন্ত খেলার মাঠে পরে থাকা। আমাদের এক অনন্য শৈশব তৈরী করেছিল।
কারো মধ্যে ছিল না তেমন হিংসে, সকলে সকলের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে স্কুলে যেতাম, খেলতে যেতাম। এখনকার কিশোরা জানেই না রুপকথা কী জিনিস, তারা জানেই না ঠাকুরমা ঝুলির কী মাহাত্ম্য কিংবা গোয়েন্দা গল্পের কী স্বাদ। তাদের কেউ জানে না আমাদের সংস্কৃতি সর্ম্পকে, তারা পুরোপুরি অগ্যাত।
সময়ের এবং যুগ বদলানো সাথে সাথেই দেখা যাচ্ছে। কিশোর বয়সে যখন আমাদের নিজেদের পৃথিবী থাকে কিছু কল্পনা কে ঘিরে। সুন্দর একখানা কিশোর কাল তৈরী করার বয়স তখনই আমাদের সমাজের, পাড়ার কিংবা মহল্লায় তৈরী হচ্ছে কিছু কিশোর গ্যাং।
এই কিশোর গ্যাং আমাদের সমাজ এবং জাতির জন্য খেয়ামতের কাল ডেকে আনবে। এসব কিশোর গ্যাং-এর ছেলেরা সকলে মদ, গাঁজা, সিগারেট, চুরুট এবং বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করছে।
বিশ্ব দরবারে তৈরী হবে কিছু বাংলাদেশি জঙ্গী কিংবা সন্ত্রাস। দেশে প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে খুন, ধর্ষণ এবং চুরি-ডাকাতির মতো বড় বড় অপরাধ৷ এইসব অপরাধের সাথে সংযুক্ত হচ্ছে আমাদের কিশোররা, তারা ধীরে ধীরে অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে। তাছাড়া তাদের নিয়ে তৈরী হচ্ছে কিশোর গ্যাং, এদের দিয়ে মারামারি করানো এবং বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের ব্যবসা চলছে রমরমা। এই কিশোর গ্যাং আমাদের সমাজের জন্য বড়সড় হুমকী। কিশোর গ্যাং এর ফলে পাড়া-মহল্লায় লেগে থাকে মারামারি হানাহানি৷ কতিপয় ব্যাক্তিবর্গ এবং কিছু কিছু এলাকায় রাজনৈতিক নেতারা তাদের বাহবা দিয়ে নোংরা রকমের রাজনীতি করে যায়। এসব কিশোর গ্যাং এর হাত ধরে৷
তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় লোকচক্ষুর আড়ালে অস্ত্র এবং তাদের দিয়ে করানো হচ্ছে ড্রাগসের রমরমা ব্যবসা। এইরকম চলতে থাকলে আমাদের সমাজ ধ্বংস হতে বেশিদিন লাগবে না।
কিশোর গ্যাং-এর ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে আমাদের কিশোরদের বাঁচাতে হলে চাই। এর ক্ষতিকর দিকগুলো সর্ম্পকে তাদের জানানো, বুঝানো।
অভিভাবকদের উচিত ছেলে কোথায় যাচ্ছে। কার সাথে মেলামেশা করছে।
স্কুল, কলেজে ঠিক মতো যাচ্ছে কিনা, প্রাইভেট টিউশনে ঠিক মতো যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখা।
রাস্তাঘাটে কিংবা বাইরের মানুষদের সাথে কীভাবে আলাপ-ব্যবহার করবে তা শেখানো উচিত। পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষা প্রদান করা উচিত। যাতে করে আমাদের লজ্জা পেতে না হয়, কোনো এক ইভটিজারের অভিভাবক হিসেবে। কোনো এক ধর্ষকের অভিভাবক হিসেবে, লজ্জা পেতে যেন না হয়।
কিশোর গ্যাং সমাজের কীটস্বরুপ, এদের থেকে তৈরী হবে। আগামীর ইভটিজার, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস এবং জঙ্গী।
আমাদের এই বিষয়ে সচেতন হওয়া অতীব জরুরী। আমাদের সমাজ বাঁচাতে হলে। কিশোরদের ধরে রাখতে হবে। তাদের কে ধ্বংস হওয়ার আগে এই বিষয়ের খারাপ দিক গুলো নিয়ে। তাদের সাথে আলোচনা করে ভালোর দিকে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের সমাজ বাঁচাতে হলে কিশোরদের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে৷ তাই কিশোরদের অপরাধের হাত থেকে দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে আমাদের সকলের উচিত সচেতন হওয়া।