বদ্ধ কামড়ার দরজা খুলে তুমি ভেতরটাতে এলে
নীলে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা ঝুলগুলো
ডিম লাইটের আলোয় ক্যামন মিইয়ে গেছে।
তাই ওসব যে তোমার চোখে পরেনি
তা আমি ভালোই জানি।
দেখলাম তোমার হাতে মগ,
বিছানার চাদরে তোমার যে ঘ্রাণ ছিল হঠাৎ উবে গেল
কফির ঘ্রাণে ঘর যে মো মো করছে তখন বুঝলাম।
তুমি পাশে বসতে বসতে আহত গলায় বললে
-ইরিনা, কখন থেকে তোমায় খুঁজছি! তুমি এক্টু বলেও আসলে না...
-কফি এনেছি, খাও
-ঘুমোবো, এই বিচ্ছিরি ডিম লাইটটা বন্ধ করো তো। বা পাশের পর্দাটা ভালোমতো টেনে দিও
-তো কফি টা কি করবো, গরম ছিল যে
-বেড টেবিলে রেখে এখানে এসো
-আমার যে ঘুম আসছে না, কবিতা শুনবে?
- অল্পেক্টু..
- আমি কি সহস্র সহস্র বর্ষ এভাবে তাকিয়ে থাকবো শূন্যতার দিকে?
- আমি তো বল্লামই যে শোনাও
- আহহা! থামালে কেন?
- ও আমি বুঝিনি যে শুরু করেছ।
-আমি কি সহস্র সহস্র বর্ষ এভাবে
তাকিয়ে থাকবো শূন্যতার দিকে?
এই শূন্য ঘরে, এই নির্বসনে
কতোকাল, আর কতোকাল!
আজ দুঃখ ছুঁয়েছে ঘরবাড়ি,
উদ্যানে উঠেছে ক্যাকটাস
কেউ নেই, কড়া নাড়ার মতো কেউ নেই,
শুধু শূন্যতার এই দীর্ঘশ্বাস, এই দীর্ঘ পদধ্বনি।
টেলিফোন ঘোরাতে ঘোরাতে আমি ক্লান্ত
ডাকতে ডাকতে একশেষ;
কেউ ডাক শোনে না, কেউ ফিরে তাকায় না
এই হিমঘরে ভাঙা চেয়ারে একা বসে আছি।
এ কী শাস্তি তুমি আমাকে দিচ্ছো ঈশ্বর,
এভাবে দগ্ধ হওয়ার নাম কি বেঁচে থাকা!
তবু মানুষ বেঁচে থাকতে চায়, আমি বেঁচে থাকতে চাই
আমি ভালোবাসতে চাই, পাগলের মতো
ভালোবাসতে চাই-
এই কি আমার অপরাধ!
-আরেক্টু শুনবে?
-মনে হচ্ছিলো বলি যে থেমো না, কিন্তু চুপ করে তোমার নিশ্বাসের শব্দ শুনতেও ভাল্লাগছিলো। ওদের কেমন ছন্দ মতন আছে।
যেন ওরা বলছে :
আমার ভেতরে শুধু এক কোটি বছর ধরে অশ্রুপাত
শুধু হাহাকার
শুধু শূন্যতা, শূন্যতা।
মন ভালো নেই অর্ণব,
আমার সত্যিই মন ভালো নেই।