মৌ-প্রিয়া,
নতুন বছরের নতুন একটা সকালে তোমার দিকে শব্দ ছুড়ছি। তিনবছরে কতো শব্দই তো পাঠিয়েছি ডাকযোগে। কোন উত্তর দাও নি। দূর করো নি মাকড়শার জালের মতো হৃদয়ের দেয়ালে ছড়িয়ে থাকা আক্ষেপগুলো । তবুও লিখছি, মুক্তো ছড়াচ্ছি উলুবনে।
প্রিয়া, ডিজিটালাইজেশনের একুশ সাল তো বিদায় নিল। তবুও সেকেলে, প্রাচীন যুগে তোমার ডাকা তথাকথিত ক্ষেত হয়েই কালি বমি করা কলম, ঔষধ কারখানায় কাজ করা দুলাভাই থেকে চুরি করা প্যাডের পৃষ্ঠা আর উদ্ভট মন নিয়ে টেবিলে বসলাম। তোমাকে নিয়ে দু লাইন লিখি। জ্বলে যাচ্ছো? আচ্ছা একটু ধৈর্য্য রাখো। লেখাগুলো পড়ো।
জানো মৌপ্রিয়া, রেগে গিয়ে তুমি যখন শব্দ ভুলে যাও তোমার মুখাবয়ব দেখে আমি বড্ড বেশিই পুলকিত হই। স্মার্টফোন আর প্রযুক্তির প্রতিযোগিতা এতোই প্রকট হয়েছে, তিন বছর আগে ভেঙ্গে যাওয়া তোমার আমার প্রেমের গল্পটাকে জাদুঘরে রাখলে দর্শনার্থী সামাল দেয়া মুশকিল। তোমার বিশুদ্ধ হাসি আর আমার মুগ্ধতার যোগ্য সঙ্গ কোন চুড়াতেই ময়ূরপাখা রাখবে না।
প্রিয়া, এখন তো মুঠোফোনেই বিয়ে হয়। প্রেম হয় দুই আঙ্গুলের মেসেঞ্জার বার্তায় । আবার ব্লোক দিলেই তাকে বলা হয় সহজাত বিচ্ছেদ। আমাকে ছেড়ে গিয়ে তুমিও ডজনখানেক ফেসবুকপ্রেম করো নি তো? করলে কিন্তু গল্পটা সেই হবে!
ভেবেছি নতুন বছরে চশমা পড়ব। ধূলোর শহরে খালি চোখে ধূলো পড়লে চোখ মোছার অভ্যাস আমার বহুদিনের। আমার কিন্তু ভীষণ ভয় হয়। পাছে, চোখ মুছতে দেখে কেউ যদি সহমর্মিতা দেখায়। এযুগের সহমর্মিতা ফেসবুকের স্যাড রিএকশনেই সীমাবদ্ধ!
মৌপ্রিয়া, আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করো। আমাদের অবিশ্বাসগুলো যুগের যাতাকলে বিশ্বাস হয়ে ওঠবে। আমাদের বিরক্তিগুলো অনুরক্তি আর মায়াগুলো প্রেমে রূপ নিবে। একদিন তৃতীয় পক্ষের মানুষগুলোতে বাড়ি ভরে যাবে, সানাইয়ে সুর উঠবে, "আজ অমুক-তমুকের বিয়ে।"
আতিক মেসবাহ্ লগ্ন,
১ জানুয়ারি ২০২২।