একেই বলে রক্তের টান ।একেই বলে সম্পর্ক। দেবমাল্য অফিসে বাস ধরার জন্য ছেলে সৌরভকে কোলে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়েছিল। দূর থেকে দেখতে পেল তার প্রাক্তন স্ত্রী রিতা দৌড়ে কাছে এলো ।এসে বলল -আমাকে একবার খোকাকে দাও কোলে নি।
—- দেবমাল্য বলল - সেই অধিকার তুমি হারিয়েছো। যখন ছেলের বয়স পাঁচ মাস হয়নি তখন তুমি আমাকে , ছেলেকে ছেড়ে দিয়ে মোটা রোজগেরে ছেলেকে বিয়ে করে চলে গেছলে।
আজ এসেছো অধিকার ফলাতে?
—--অধিকার নয় আমি সম্পর্ক ভালোবাসা বুঝতে পেরেছি। আমার স্বামী নওয়াজ পান থেকে চুন খসলেই আমাকে মারধোর করে, কোন স্বাধীনতা নেই। আমি সুখে নেই ।আমি তোমার কাছে আবার ফিরে আসতে চাই।
—-তুমি কি মনে করেছ আমি খেলার পুতুল তুমি যখন খুশি আমার কাছে আসবে যখন খুশি ছেড়ে চলে যাবে ?আমি তোমার ছবি মন থেকে মুছে ফেলেছি। ফেরার রাস্তা চিরতরে বন্ধ। আমি এই ছেলেকে নিয়ে সেই পাঁচ মাস বয়স থেকে কোলে নিয়ে অফিসে যাই একটি রুমে বসিয়ে রেখে নিজের কাজ করি আবার বাড়িতে ফিরে নিয়ে আসি। এইভাবে পাঁচ বছর প্রায় চলছে আর তোমাকে কোন দরকার নেই। একটা বাস আসছিল
রিতাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে উঠে পড়ল।
দূর থেকে রিতার বর্তমান স্বামীর নওয়াজ
দেখতে পেয়ে কাছে এসে সোপাটে এক চড় মেরে বলল- হারামজাদি তোর আগের স্বামীর কাছে এসেছিলি? ছেলের বরের টান এখনো যায়নি তাই না? ওর কাছেই থাক আর আমার ঘর পা দিবি না। পা দিলে পা দুটো ভেঙে দেবো।
রিতার একুল ওকুল দুকুলই থাকল না ।খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলো অভাবী স্ত্রী বা মা।
ডাঃ হর্ষময় মণ্ডল, বড়জোড়া, বাঁকুড়ায় বসবাস করেন। বাবার নাম কুচিল চন্দ্র মণ্ডল, মায়ের নাম আনন্দময়ী মণ্ডল। প্রকাশিত গ্রন্থ:- ছোট গল্পের - বৈশাখে বসন্ত; অপরাহ্ণের আলো, প্রেম অপ্রেম। কাব্য গ্রন্থএকাকী। যাত্রা:- সুখের ঠিকানা র খোঁজে, প্রতিদ্বন্দ্বী, আমি এক জলন্ত আগুন প্রভিতি। ছোট নাটক প্রচুর আছে। তাঁর নাটক আকাশবাণী কলকাতা কেন্দ্রে প্রত্যাশা অনুষ্ঠানে অভিনীত হয়। তিনি একাধারে সঙ্গীত শিল্পী, অভিনেতা, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক এবং ইস্কুলে চাকরি করেন।