বাংলা ভাষা, মাতৃস্তন্যপেয়, মাতৃজঠর হতে
আমার মরমে প্রবেশ তার, যেমন পরাগে মধুপের সঙ্গম |
প্রেমে, অপ্রেমে কিংবা বিরহে, মক্কা মদিনায় কিংবা
কাবা পাথরে আমি শুধু তাকেই দেখতে পাই|
এ ভাষা আমার প্রথম সোপান, অনশ্বর ঈশ্বরসম|
রাস্তায় মিটিংয়ে মিছিলে, কিংবা প্রেমিকার প্রথম চুম্বনে
ভীষণরকম ভাবে মিশে আছে সে, উদ্বাস্তু বিহঙ্গ আর দিকভোলা তটিনীর মতো|
গৃহহীন শ্রমিকের দাবী কিংবা দশটা পাঁচটার বিক্ষোভ অনলে,
সস্তার কেবিনে অন্তরঙ্গতায় আমি শুধু তাকে দেখি|
যে আমার কলমে এঁকে দেয় রফিক, জব্বার কিংবা নমিতার মরদেহ|
“বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে” শত বিহঙ্গের কলতান
আমার মরমে ভোরের আজান কিংবা আহিঃ ভৈরবী হয়ে নাড়া দেয়|
সকল চিন্তনকে কাঁপিয়ে, এঁকে দেয় ভাষা শহীদের লাশ|
নিরেট কর্পোরেট সম অন্তরঙ্গ যৌনতার বেড়াজাল
ঘিরে ফেলে আমাকে, ঠিক তখনই বিজ্ঞাপনের পাতায় দেখি
“মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো”,
রমনা কিংবা শিলচর, ধানসিঁড়ি কিংবা ইছামতি, সীমানা মুছে এঁকে দেয় এক নতুন মানচিত্র|
যেন নবান্নে সন্ধ্যামালতীর আঘ্রাণ||