"শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তাকে
তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও" (আল হাদিস)
উক্তিটি কম বেশি সবাই আমরা জানি, কিন্তু কতজনেই বা মানার চেষ্টা করি।আমাদের দেশে খেটে খাওয়া নিম্ন-মধ্য শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের অভাব নেই যাদেরকে আমাদের দেশের কিছু ধনী শ্রেণীর মানুষেরা সবসময় দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এমনি একজন নিম্ন-মধ্য শ্রেণীর গার্মেন্টস কর্মকর্তা মিলি বেগম। দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে তার ছোট সংসার । তার স্বামী মারা গেছে আজ ৫ বছর আগে। তখন থেকেই তার স্বামীর পূর্বের পেশা গার্মেন্টস এ যুক্ত হয়ে একা সংসার চালিয়ে যাচ্ছে মিলি।তাকে সাহায্য করার মতো কেউ নেই তার ছেলে মেয়ে দুজনেই ছোট তার ছেলের বয়স ৮ বছর আর মেয়ের বয়স ৫ বছর।আশে পাশের মানুষেরা যদিওবা তাকে মাঝে মাঝে সাহায্য প্রদান করে কিন্তু তাতে তার সংসার পুরোপুরি ভাবে চলে না।তাকে নিজেকেই উপার্জন করতে হয়। একজন গার্মেন্টস কর্মকর্তা হিসেবে তার উপার্জন খুবই কম।শুধু যে তার সাথে এমন অবিচার হয় এমনটা নয় তার সাথে কাজ করা অনান্য কর্মচারীদেরও বেতন কম দেওয়ার চেষ্টা করে গার্মেন্টসের মালিক। অনেকবার এই অবিচারের প্রতিবাদও করেছে মিলি কিন্তু প্রত্যেকবারেই তাকে ধমক দিয়ে আটকিয়ে দিয়েছে গার্মেন্টসের মালিক। তাই এখন যেন হাল ছেড়েই দিয়েছে মিলি। তার মনে হাজারো ক্ষোভ থাকা সত্ত্বেও সে আর প্রতিবাদ করে না। একদিন মিলি টিভিতে মে দিবস সম্পর্কিত একটি অনুষ্ঠান দেখতে পায় যেখানে সে মে দিবস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারে। মে দিবস সম্পর্কিত সেই অনুষ্ঠানটি দেখে তার মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়।তাই এবার সে মে দিবস এর শিক্ষা নিয়ে সবাইকে জোড়ো করে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। তার সহকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলে প্রথমে অংশগ্রহণ করতে না চাইলেও মে দিবসের শ্রমিকদের আত্মত্যাগের কথা শুনে তারা রাজি হয়। বিক্ষোভ মিছিলের মুখে পরে গার্মেন্টসের মালিকও বাধ্য হয় শ্রমিকদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে। সেই মিছিলের পর থেকে গার্মেন্টসের মালিক আর কখনো কারও অধিকার কেড়ে নিতে পারে নাই। এভাবেই মে দিবসের শিক্ষা বদলে দেয় মিলিদের জীবন। সব কথার শেষ কথা এই পৃথিবীতে যেমন ভালো মানুষ রয়েছে তেমনি খারাপ মানুষও রয়েছে।খারাপ মানুষের অত্যাচারের বিরুদ্ধে যদি আপনি প্রতিবাদ না করেন তবে সে আরও খারাপ হয়ে উঠবে।তাই আমাদের উচিত মে দিবসের মতো মহান দিবস গুলোর শিক্ষা নিয়ে দলবদ্ধ ভাবে খারাপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।