কবি
কবি জানে পরাজয় তার একার নয়
অপমান নিষ্কাশন বিতাড়ন শেষে
একবার ভোরের সূর্য ওঠে ।
নদীর রুপোলি জলে খান খান হয়ে যাওয়া
স্মৃতির পালক
অজান্তে আশ্রয় পায়
পাথরের ঘরে ।
অভিজ্ঞান
আশাহত প্রদীপের তীরে
যে সম্রাট তুলে দিল
শাসনের বেড়াজাল
তার কাছে নতজানু ভিখারিনী
অস্ফুট শিশুর শবের মতো
অভিজ্ঞান খুঁজে খুঁজে দিশাহারা ।
তারপর
সময়ের শেষে
হ্রস্ব শীতের মাঠে
শুরু হল ব্যবসায় ।
শস্যসম্ভার ।
দোষারোপ ।
কাজল বৈষ্ণবী
আমাদের দিনগুলো কাজল বৈষ্ণবী ।
দোতলার ক্লাসরুমে ভাঙা কাচ—
প্রেমপ্রার্থীর রাগের স্বাক্ষর ।
ভিড়ভাড় বাসের ভেতর
শ্বাসকষ্টে আমাদের অক্ষরের মালা ।
জল বেয়ে ভেসে গেছে জীবনশুক্রেরা
শীতঘুমে বাঙ্ময়
বাদামপাহাড়মুখী
অনাবিল ঢিলেঢালা রঙচটা
প্ল্যাটফর্মদেবী ।
বিপন্নতা
এই মাঠে গাছের গায়ে বাঁধা ছিল অনেক ঢিল
তার দিকে তোমার নজর যেতেই
আমরা বিশ্বাস রেখে এসেছিলাম
অথচ সে-মাঠেই আমরা আর যাইনি কোনওদিন
আমরা আর পরস্পরের নিঃশ্বাসের সুর শুনতে পাই না
কে কোথায় আছি তা সম্পূর্ণ অজানা
অচেনা এক শহরে রাজপুরুষ খুঁজে পাওয়া সহজ ছিল না
নীল মুদ্রাযন্ত্রের ভিতর কত গল্প বোনা হয়ে যায়
কত লবণহীন আঁচের উত্তাপে জ্বলে যেতে থাকে
পরিকল্পিত ব্যঞ্জন
মুগ্ধতা বলে যাকে জানতাম তা পরে
বিভ্রমের পথে গেছে
অসহায় দিনগুলো কেটে যাচ্ছে ভালো
কেউ আসবার নেই
হাতের থাবায় ধরা দৃঢ় অধিকারে কালক্রমে হাওয়ার দীনতা
উত্তরের গান
তুমি সেই সুগন্ধী ফুঁ-য়ের জোরে
প্রকৃত পোশাক চিনে নিলে
প্রশ্নে প্রশ্নে ছুটে গেলে গ্রাম থেকে গ্রামে
সূর্য কী কোথাও যায় স্বজন হারিয়ে !
একটি পরাজিত লোক সারাক্ষণ তোমার পাশেই ;
ছিন্ন কর বেলা ও অবেলার অর্থহীন হাসি
অষ্টাবক্র এ পাথর – কলঙ্ক ও রক্তের স্মৃতি ---
ঘুমের ভেতর তোলো উত্তরের গান ।
সুবীর ঘোষ
৩০১ আশ্রয় এ্যাপার্টমেন্ট
গ্রুপ হাউসিং , বিধাননগর
দুর্গাপুর—৭১৩২১২।