মৃদুল বাবু প্রবাস জীবনের ইতি টেনে বেশ কিছুদিন হলো গাঁয়ে ফিরেছেন।সামাজিক নানান কর্মকাণ্ডে প্রায়শঃই তার পদচিহ্ন পাওয়া যায়। মৃদুল বাবুর বিদেশী টাকার গন্ধে শত্রুপক্ষের অনেকেই তার মিত্র সেজে বসে আছে।ঘরে বাইরে স্বামী স্ত্রী দুজন ছাড়াও পুত্রদ্বয় রয়েছে;শহরের নামী কলেজে পড়ে।স্ত্রীর পরামর্শে বাড়ির সামনেই কাঠা তিনে ফাঁকা জায়গায় শখের বসে ফুল ফলের বাগান করেছেন।চারপাশে ঘরবাড়ি না থাকার কারনে জায়গাটা বেশ ফুরফুরে।সকাল সন্ধ্যা ফুল ও ফলের গাছে জল দেয়া,যত্ন নেয়ায় গাছ গুলো বেশ ডাগর ডোগর হয়েছে।কিছু ফুল গাছে ইতিমধ্যে কলি দেখা যায়;পাখিদের আনাগোনাও চোঁখে পড়ার মতো।এসব দেখে মৃদুল বাবুর মনটা খুশিতে ভরে ওঠে। বাগানে আসা যাওয়ার সুবাদে পাখিদের সাথেও সখ্যতা গড়ে উঠেছে মৃদুল বাবুর।পাখির ডাকে সকালের ঘুম ভাঙে;সারাদিন পাখির কিচিরমিচির ডাকে বোঝা যায় পাখিরা যেনো নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছে।একদিন মৃদুল বাবু বাগানে ঢুকতেই দু'টি বুলবুলি আম গাছের ডালে লাফালাফি শুরু করে;ওরা যেনো কিছু একটা বলতে চাইছে;আম গাছে উঁকি মারতেই চোখে পড়ে একটি পাখির বাসা,বাসার মধ্যে পাখির ছানারা আওয়াজ করছে।মৃদুল বাবুর বুঝতে বাকি রইলো না ওরা মা বাবা হয়েছে;এই খুশির সংবাদটাই যেনে মৃদুল বাবুকে দিতে চাইছে।বাগান জুড়ে হরেক ফুল ও পাখি; ফুলে ফুলে উড়ে মধু পোকামাকড় খাওয়ায় ব্যস্ত পাখির দল;মাঝেমধ্যে ফলগাছে পাকা ফল চাখে।ফুলের গন্ধে চারপাশ আমোদিত। ফুল ও পাখির মিলন মেলায় বারোমাসি বসন্ত বিরাজ করে বাগানটিতে।মৃদুল বাবু প্রায়শঃই পাখিদের জন্য খাবার নিয়ে বাগানে আসে;মৃদুল বাবুকে ঘিরে ধরে পাখিরা খাবার খায়।বেশ সুখ সাচ্ছন্দ্যে চলছিলো মৃদুল বাবুর ফুল ও পাখির সংসার।একদিন রাতের ঝড়ে বাগানটি তছনছ হয়ে যায়।পরদিন সকালে মৃদুল বাবু বাগানে ঢুকতেই দেখে পাখির বাসা গুলো মাটিতে পড়ে আছে; ডিমগুলো ভেঙে গেছে।আহত পাখিরা খুড়িয়ে খুড়িয়ে এসে তাদের দুঃখ দূর্দশার কথা মৃদুল বাবুকে কিচিরমিচির ডাকে শুনিয়ে যায়।মৃদুল বাবুর বুকের ভিতরটা চিনচিন করে ওঠে।শখের বাগানটি নতুন করে সাজিয়ে তুলতে কাজে লেগে পড়ে মৃদুল বাবু।হয়তো আবারো ফুল ও পাখির আসর জমবে!বারোমাসি বসন্ত বিরাজ করবে।