হে অনাগত কবি
ছুঁড়ে ফেলো তোমার ডায়েরি কলম,
তুমি লিখবে না কোন কবিতা,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
যে শিশু অনাহারে-অর্ধাহারে পথের ধূলোয় পড়ে আছেÑ
তুমি যাও তার কাছে
ভালোবেসে জড়িয়ে নাও,
তুলে দাও এক মুঠো খাবার,
বুকে দাও আশ্রয়।
নতুবা কবিতা লেখা ভুলে যাও,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
যৌবনের শুরুতে যে বোনটি ধর্ষিত,
সমাজের চোখে কলঙ্কিত
তুমি যাও তার কাছে,
তোমার সমস্ত ভালোবাসা দিয়ে তাকে বুকে নাও।
না হলে ছেড়ে দাও কবিতা লেখা
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
হে অনাগত কবি
মানবপ্রেমের শিক্ষা যদি
তোমার হৃদয়ে প্রজ্জলিত না-ই হয় তবে
লিখবে না তুমি কোন কবিতা,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
মহত্ত্বের পথে যদি তোমার পা আঁটকে যায়
তবে হেঁটো না তুমি
লিখবে না তুমি কোন কবিতা,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
ব্যক্তিস্বার্থকে ত্যাগ করে স্বদেশকে যদি আপন নাই ভাবতে পারো
তবে লিখবে না কোন কবিতা,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
শ্রদ্ধা, প্রেম, ভালোবাসা তোমার থেকে যদি শেখা নাই যায়
তবে ফেলে দাও কলম,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়ে
যে সমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে
মানবতাকে প্রতিনিয়ত করছে ক্ষতবিক্ষত;
তোমার ভালোবাসা,
হৃদয়ের কোমলতা,
সরল হৃদয়ের ঔদার্য
যদি নাই ফেরাতে পারো তবে,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
হে অনাগত কবি
ব্যথিতের ব্যথা নিবারণে ঔষধ হও
নতুবা অক্ষর ভুলে যাও,
কবিতা লেখা তোমার শোভা পায় না।
হে অনাগত কবি-
যে জননীর পদতলে স্বর্গ
যার আঁচলে ভালোবাসার ছোঁয়া
সেই গরীয়সী মহীয়সী ত্যাগী মা আজ বৃদ্ধাশ্রমে মৃত্যুর প্রহর গুণছে
তুমি যাও তার কাছে,
খুঁজে নাও জীবনের মানে...
কবিতা লেখা তোমার সেখানেই শোভা পায়।
মতিয়ারা মুক্তা। কবি ও সংগঠক হিসাবে “মাটির মা” নামেই দুই বাংলায় পরিচিত। পিতা রুহুল আমিন, মাতা আনোয়ারা বেগম, শালিয়াবহ, পেচারআটা, ঘাটাইল, টাঙ্গাইল। বাংলায় স্নাতকের (সম্মান) শিক্ষার্থী।
স্কুল জীবন থেকেই লেখালেখি পছন্দ। বড়ভাই গীতিকার আনোয়ার হোসেনের অনুপ্রেরণায় লেখালেখির হাতে খড়ি। এপর্যন্ত প্রকাশিত একক গ্রন্থ সংখ্যা ৮ টি এবং যৌথভাবে ৮০টিরও উপরে এবং সম্পাদিত গ্রন্থ ২৩টি। এছাড়াও তার সম্পাদনায় নিয়মিত প্রকাশিত হয় ম্যাগাজিন “মায়ের ঘর” এবং মাসিক সাহিত্য পত্রিকা “মায়ের ঘর”।