কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নরসিং ভাঁজ মৌজার কাচকোলে এই বুরুজটি অবস্থিত। অযত্ন অবহেলা ও সংরক্ষণের অভাবে কালের পরিক্রমায় বুরুজটি ধ্বংস প্রায়। জানা গেছে প্রতিষ্ঠাকালীন ৮০/১০০ ফুট বুরুজটি থাকলেও বর্তমানে ১৫/২০ ফুট। স্থানীয়রা বলেন মাটিতে দেবে আজ এই অবস্থা। মাটির উপরে যতটুকু দেখা যায় তাও আজ বটবৃক্ষের দখলে। স্থানীয়রা বুরুজটি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না। একজন বৃদ্ধকে জিজ্ঞাস করে জানতে পারি উনার ছোটবেলা থেকে তিনি এটি দেখে আসছেন। তিনি তার বাপ-দাদাদের জিজ্ঞাস করেও তেমন কিছু জানতে পারেন নাই। কুড়িগ্রাম জেলার ইতিহাস নামক গ্রন্থ থেকে জানা যায়, এই বুরুজটি মোঘল আমলে নির্মিত। লেখক ধারণা করেন এই এলাকাটি ছিল তৎকালীন মোঘল সাম্রাজ্য, কামরূপ রাজ্য ও কোচবিহার রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকা। বাহারবন্দ পরগণা বার বার কামরূপ ও আসামের সৈন্যদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ায় মোঘলরা তাদের দখলকৃত পরগণাকে বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণ করেন। স্থানীয়ভাবে যা বুরুজ নামে পরিচিত। বুরুজ এর অর্থ উঁচু ঢিবি বা পর্যবেক্ষণ চৌকি।
বুরুজের গোড়ার চারদিকে সাড়ে সাত ফুট ইটের গাথুনি রয়েছে। প্রায় ছয় ফুট পর পর এটি ক্রমান্বয়ে চিকন হতে হতে উপরের দিকে উঠে গেছে। বুরুজের গোড়ায় মাঝ বরাবর উত্তর-দক্ষিণমুখী একটি বৃত্তাকার সুরঙ্গপথ ছিল। এই সুরঙ্গপথের দুই দিকে দুটি লোহার গেট ছিল। মাটির নিচে দেবে যাওয়ায় অনেক আগে সুরঙ্গ পথটি বন্ধ হয়ে গেছে। বুরুজের মাঝখানে উপরে ওঠার জন্য একটি সিঁড়ি ছিল। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে মোঘল সৈন্য/ কর্মচারী প্রতিদিন এর মাথায় একটি বাতি জ্বালাত বলে জনশ্রুতি রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত বুরুজের জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পতিত থাকার পর বর্তমানে বুরুজের খাস জমিতে স্থানীয় লোকজন চাষাবাদ করছে এবং বসতবাড়ি গড়ে তুলেছে।
বুরুজটি সংরক্ষণ করলে হতে পারত একটি দর্শনীয় স্থান। ভ্রমণপিয়াসী দর্শনার্থীরা দেখতে পারত মোঘল আমলের স্মৃতিচিহ্ন। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বুরুজটির ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণের।

ইতিহাসগুলোকে একটু একটু করে এভাবেই তুলে ধরতে হয়। ভালো করেছো ছোট ভাই। ইতিহাস হোক বিনির্মাণ। ভারতীয় তথা হিন্দুদের হাত থেকে এই জনপদ সম্পূর্ণ মুসলমানদের দখলে নিতে হবে। এই চর্চা যেন থেমে না যায়।
ReplyDeleteধন্যবাদ আপনাকে
ReplyDelete