জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বিদ্রোহী কবি নজরুল ১৯৭৬ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ক্ষুরধার লেখনী আজও বাঙালি জাতিকে প্রেরণা যোগায়। সাম্য আর অসাম্প্রদায়িক চেতনার মর্মবাণী উগ্র সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধের শক্তি যোগায়। পৃথিবীতে তাঁর জীবনকাল ৭৭ বছর হলেও ক্ষুরধার লেখনীর সময়কাল ২৩ বছর। প্রায় ২ যুগ তিনি তাঁর অনবদ্য সৃষ্টিশীল লেখনী দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা সাহিত্য জগত। ৪৪ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও বাঙালির জীবনে আজও উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলো ছড়ান কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে। মাত্র ৯ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়ে দুঃখের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকায় দুখু মিয়া নামে পরিচিত হন নজরুল।
রুটির দোকানে কাজ করা, লেটোর দলে যোগ দেয়া, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়া, সাংবাদিকতা, রাজনীতি সব মিলিয়ে বিচিত্র আর বর্ণাঢ্য ছিল তাঁর জীবন।
যদিও একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক এবং অভিনেতাও ছিলেন নজরুল; তথাপি তিনি বিদ্রোহী কবি হিসেবেই অধিক পরিচিত। তাঁর কবিতা ও গান শোষণ-বঞ্চনা-পরাধীনতার বিরুদ্ধে সংগ্রামে জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তাই বাজেয়াপ্ত হয় তাঁর লেখা, কারাবরণ করেন নজরুল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও তাঁর কবিতা ও গান ছিল প্রেরণার উৎস।
ধর্মীয় কপটতা এবং গোড়ামীর ঘোর বিরোধী ছিলেন নজরুল। একই সঙ্গে ইসলামি গান এবং শ্যামা সংগীত রচনার মধ্য দিয়ে যার প্রমাণ মেলে। মাত্র ৪৩ বছর বয়সে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হন ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো এ মহান পুরুষ।
স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে নজরুলকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সপরিবারে এদেশে নিয়ে আসেন। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৪ সালে তাকে সম্মানসূচক ডিলিট. উপাধি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মৃত্যুর কিছুদিন আগে সাম্যের কবিকে একুশে পদকে ভূষিত করে রাষ্ট্র।