আমাকে অভিঘাত করে কতদূর তাড়িয়ে দেবে,
আমি তো পুনশ্চ ফিরে আসবোই।
আমাকে খুঁজে পাবে কৃষকের কঠোর হাতে,
অনাথের বুকভরা কষ্টের ভিতরে,
বৃদ্ধার বিনিদ্র রজনীতে,
রাজপথ যখন উত্তাল কেঁপে-কেঁপে উঠবে,
অধিকারের বীজ হয়ে আমি থাকব
নিপীড়িতর বজ্রকন্ঠে।
আমি সত্যান্বেষী-ন্যায়ানুগ ছিলাম,আছি-থাকবোই,
অতএব,নশ্বর পৃথিবীতে আমি তো পুনঃপুনঃ ফিরে আসবোই।
প্রাবল্যের কাছে কভু নত করি না শির,
সাচ্চাকে আকড়ে ধরাই ব্রত আমার,
তবুও স্কন্ধে চাপায়ে অপবাদ,
মৃত্যুতে খুঁজি নীড়।
যুগের কালপর্বে ধারক হয়ে ফিরি সত্যের।
আমাকে খুঁজে পাবে পীড়িতর ভাঙ্গা হাড়ে,
রাজপথে ঢেলে দেয়া রক্তের
প্রতিবিম্বে,
বুলেট-বিদ্ধ বক্ষের দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাসে,
কখনো খুঁজে পাবে মধুমক্ষিকার একাট্টে।
জড়তার মহীতে আমি যে ন্যায়ের বাস করাবোই,
তাইতো আমি পুনরায় ফিরে আসবোই।
আমি ছিলাম নজরুলের বিদ্রোহী চেতনাতে,
ফরাসি বিপ্লবের মেহনতি মানুষের অন্তরে,
গান্ধীজির ডাকে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে।
আমি আরও ছিলাম মার্কসের সমতার লেখনীতে,
ফিদেল কাস্ত্রো,চে সহ শত বিপ্লবীর প্রাণে প্রাণে,
আজন্ম আমার পদচারণা রয়েছে সত্যকে ঘিরে।
যেথায় আমি দেখেছি দূর্জধন-শকুনির কীটবাস,
আমি সেথায় ফিরে এসেছি হয়ে যুধিষ্ঠির-ভীমরাজ।
অন্যায় অবিচারের কবল হতে জাতিকে রক্ষার্থে-
আমি ফিরে এসেছি বারেবারে ধূমকেতু হয়ে।
আমি আগমন করেছি দুর্ভিক্ষে অনাহারীর ক্ষুধার রাজ্যে,
জঠর পীড়ায় পূর্নিমা রাতে ঝলসানো রুটির বেশে।
আমি জাগ্রত হয়েছিলাম ত্রিশ লক্ষ শহিদের হৃৎস্পন্দনে,
কখনো বা ভলতেয়ার,রুশোর তীব্র লেখনীতে-
আবার কখনো লিংকনের দাসপ্রথা নিপাতে।
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে কখনো হইনি তো পিছপা,
তাইতো সৃষ্টিলগ্ন থেকে আজও আমি জনমানুষের প্রেরণা।
আমার অহমিকার সত্যকে আমি যে আগলে রাখবোই,
সহস্র নারকীয়তার ভীড়েও আমি ফিরে আসবোই।
আমি এসেছিলাম শেখ মুজিবের রেসকোর্সের দীপ্ত ভাষনে,
লুথার কিংয়ের একখানা সোনালী স্বপ্ন হয়ে,
শেতাঙ্গদের জমদূত হয়ে কখনো ফিরে এসেছি-
মাদিবার চার প্রকোষ্ঠের দুই যুগের কারাগারে।
আমি সারাবিশ্ব মন্থন করে চিনায়েছি সত্যকে,
গর্জে উঠেছিলাম তিতুমীরের বাঁশের কেল্লায়-
ফের কখনো এসেছি দুন্দুভি ঢাকে।
আমি ও আমার সেনানীরা ধরনীতে বিচরণ করবোই,
যেখানে হবে অনাচার,ঘাত-প্রতিঘাত চালাবোই।
হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে আমিতো আবার ফিরে আসবোই।