পুব-পশ্চিম
একদা আমার উঠোন ভর্তি থাকতো
মুঠো মুঠো সোনা
খুঁটে খুঁটে খেয়েছে সুখের পায়রা,
পাখিদের আনাগোনা
একে অপরের পাশাপাশি গা ঘেঁষাঘেঁষি!
খোশগল্প, আড্ডা ও আনন্দে মত্ত-
সুখের পায়রা, শুকপাখী, সুখসাচ্ছন্দ্যের সাথী।
আজ আমার উঠোন ভর্তি ময়লা
নেই দূর্বাদল, গুল্মলতাপাতা
জাপটানো মায়া আবরণ
ওঠে না রোদ, ডুবেছে যে সূর্য
আহা, ওই চান্দের সাথে পূর্ণিমার আলাপন-
এখন অমাবস্যার কালগ্রাস!
আঁধারে ছেয়েছে পশ্চিমের আকাশ।
শহিদ মিনার
রক্তে রাঙানো বুক!
যেন সূর্যের নির্মলতর রূপ,
সহস্র প্রাণের উদীপ্ত মুখ।
প্রতীক্ষার প্রহরে- বাগানের ফুল,
হৃদপিঞ্জর.. চন্দনকাঠের চিতায় দাউ দাউ জ্বলছে!
আকাশ গহীন অন্ধকারে!
নক্ষত্র শোকে বিবর্ণ! মোমবাতির
ঝড়োকান্না এবড়োখেবড়ো শিখায় জ্বলছে!
সেই আগুন ঢেলে দেবে!
কখন রাত্রির মধ্যপ্রহর অতিক্রম করবে
ভোর;
আকাশে রক্তের গন্ধ!
ধূসর ডানার চিল এলোমেলো মাতালের মতো!
বাতাসে করুণ স্পন্দন ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত-
শান্ত সাগরে অশান্ত ঢেউ :
রক্তস্রোতে দাঁড়িয়ে মা
আর পাহাড়-শূন্যতায় খাঁ খাঁ হৃদয়ে- বাবা!
আর প্রেয়সীর শীতে ভেজা কানাকুয়ার চোখ!
যেমন বেত ঝোপের শীষে ডুবায় আটকা-পড়া কানাকুয়া!
আর বোনের চোখে অগ্নিশিখা- ধুলো বাষ্প হয়ে উড়ছে!
আর ভাইয়ের বুকে বিদ্ধ বুলেটে সহোদরের হৃদয় খান খান!
তাই কপালে কাফনের কাপড় বাঁধা- রক্তাভা!
বুকে কালো ব্যাচ!
প্রতিশ্রুতি
ভালোবাসা অভিশাপ!
তার জীবন পুড়ে যাচ্ছে!
প্রতিশ্রুতির মুখে আগুনের ফুলকি!
শরীর আর মাথা আলাদা, ঝলসানো চিবুক!
সেবাকাজে নিবেদিত এক আগন্তুক
এবং প্রিয়জনের মুখচ্ছবি নির্ণয় করে
ঘুম ভাঙে প্রতিজ্ঞার।
যদিও প্রতিশ্রুতির শরীরেই পৃথিবী এখনো সবুজ।
সিগারেট-জীবন
পাখির ডানায় ঝলমলে রোদ!
প্রজাপতির রঙিন উচ্ছ্বাস!
আকাশের গায়ে উপচে-পড়া সুখ!
সুখ তো মুহূর্তের আওলা বাতাস।
কষ্ট আর যাতনার বোঝা বয়ে বেড়ায় জীবন
এতটুকু সুখের আশায়!
কষ্ট গাছের শরীর, মাটির, রাত্রির পাতায়-
কষ্ট এবং সুখ বলয়রেখা।
চায়ের পেয়ালায় সিগারেট পুড়ে ছাই!