হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বসে আছে শৌখিন। চার ঘণ্টা পেরোলো লোকগুলো আসবার নাম-গন্ধ নেই। মফস্বল থেকে বেশ দূরে এই কুটির। তবে, থাকতে ভালোই লাগছে। সৌভাগ্যবশত যাবার সময় টিভিটা চালু করে দিয়ে গেছে। সংবাদের চ্যানেল। গরম গরম সংবাদ আসছে।
গ্যাসের লাইন ফুটা করে গ্যাস চুরির সিন্ডিকেট চালু, সুজাউদ্দিনের বাসার ম্যানহোলের লাইন ব্লক করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা, স্লেইজিং করতে গিয়ে জরিমানা খেয়েছে শফিক আফতাব।
পিঠটা চুলকাচ্ছে। ঘরে মশা আছে। ধীরে ধীরে ফ্যান ঘুরছে। তাতে কাজ হচ্ছে না। এরোসোল হলে ভালো হতো । উপায় নেই। হাত বাঁধা। রুমে একটা টেলিফোন আছে। বিচ্ছিন্ন সংযোগের, অকাজের। বছর তিনেক আগে মামাবাড়ির টেলিফোনে নীলার সাথে টেলিফোনেই কথা জমতো। একবার তো মামির হাতে ধরা খেলো। মামি অবশ্য হালকা হেসেই উড়িয়ে দিলেন। বললেন- ভাগ্নে বড় হয়েছে।
হঠাৎ লম্বা গোফের মানুষটার প্রবেশ। হাতে সিগারেট। কালো জোব্বা পড়া। গরমে এই বেশ একটু বিস্ময়কর।
-আপনার বাড়ির নাম্বার দিন।
-সে নীলার থেকেই নিতে পারেন।
-কথা কম, দ্রুত নাম্বার দিন।
-কেন, নীলা দিতে পারে না? সম্পর্কের প্রতিশ্রুতিতে তো ঠিকই মা মে শাশুড়ি বলত।
-গ্যাঁজানো বন্ধ করে দিন, যদি তো বাঁচতে চান।
ছুড়ির প্রতি ভীষণ ভয় শৌখিনের। তবে সামলে নিলো। বাধ্য ছেলের মতো নম্বরটা বলে দিল।
দ্বিতীয় বারের প্রচেষ্টায় যখন কল রিসিভ হলো।ওপারে থাকা মানুষটি শৌখিনের মা নয়, অগত্যা নীলার মা। ভদ্রলোক বীরের মতো বললেন, 'আপনার প্রাক্তন বৌ-মা নীলার অনুরোধেই শৌখিনকে জিম্মি করেছি....বাঁচাতে চান তো..."
বাকিটা ইতিহাস।