করিমগঞ্জ বাজারে যে ছেলেটা গায়ে একটা ছেড়া গেঞ্জি পরে ঘুরত রাতে,
তারে দেখি বাজারের বাড়ির পাশে একটা খরের গাদায় শুয়ে আছে প্রভাতে।
গায়ে জড়ানো একটা ছেড়া শার্ট, দুটো বোতাম ছিড়ে গেছে তার৷
ধরুন সে পাগল, তাই বলে কি কনকনে শীত তার উপহার?
তারে একটা পুরোনো শাল দিলাম, একটা জ্যাকেট৷
এ যেন তাকে অবজ্ঞা আর আমার বেশরমের প্রকাশ।
শাল টা নেয়নি, কত আস্ফালন তার৷
আমরা বড্ড সভ্য বেহায়া হয়েছি সত্য নিরেট।
দৈন্য মিত্র মহির আলির জীবন। ছেলে মতিন পনেরোর কোটায়৷
স্কুলে যাইতে পারে না, বাপে গরীব, তেল আনতে নুন ফুরায়৷
এক বাবুসাবের সামনে সেদিন পুরোনো জ্যাকেটে দাঁড়ায়।
বিরক্তি নিয়ে বাবুসাব কতবার নাক সিটকায়...
বলে ছোড়া দূরে রও,
গায়ের জামা কয়দিন না ধোও?
সূর্যিরে না কি মামা ডাকে তারা?
গরীবের ডাকে দেয় না কেন সারা?
কেন চোখ বুজে থাকে কানার লাহান?
মতিনের শীতে যাবে না কি জান?
কেন আমি তারে দিই না আহার?
কেন পায় না মতিন আলো শিক্ষার?
কেন দিই না তারে বস্ত্র-বাসন?
কেন শীতে সয় সে শীতের কাঁপন?
বড় সভ্য হয়েছি, কার ধারি ধার?
এভাবেই অর্ধশতাব্দী বয়স পার।
আরও কত শীত যাবে আমার।
আমি সভ্য বেহায়া হবো আবার৷