আশরাফুল আলম'র কবিতা ।। বর্ণপ্রপাত


তুমি আমায় অলস ভাবছো,
আসলে আমার ভীষণ ভয়।
এই করোনাকালে কাজে যাবো;
যদি আমার কিছু হয়!
না না, মনটা তাতে সায় দিচ্ছে না
চলতেছে ফের লকডাউন,
বন্ধ এখন গাড়ি-ঘোড়া
বন্ধ আছে বাজার-টাউন।
সময়টা খুব বিপদজনক
ভয়ে রি-রি করছে গা,
সর্দিকাশি হলেই দেখো
ভাবছে সেটা; যা-নয় তা।
আপন-স্বজন থাকছে দূরে
গা-ছাড়া, গা-ছাড়া ভাব,
মিশতে মানা; ঘেষতে নিষেধ ;
পাড়াপরশির বাড়তি চাপ।
হাসপাতালে টেস্টে গিয়ে
দিতে হচ্ছে লম্বা লাইন,
এর চেয়ে কি নয় নিরাপদ?
বড়ির ঐ কোয়ারেন্টাইন।
প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী
থমথমে যে পরিবেশ,
পা বাড়ালেই বিপদশঙ্কা
হতে পারে জীবন শেষ!
রোগী কিংবা মৃতব্যক্তির
পাশে নাই যে আপনজন,
প্রশাসনই ভরসা কেবল
লাশটা নিয়েও প্রহসন।
এমন দিনে কোন সাহসে
বলো আমি কাজে যাই,
কোভিড-১৯পাইলে আমায়
বেঁচে থাকার আশা নাই।
ধরলে আমার গলা চেপে
তোমারও কিন্তু আছে ভয়,
ছোট-বড় সবারই তো,
থাকছে প্রাণের সংশয়।
একটু নাহয় কষ্ট হলো
খেলাম দু'দিন ভাতে-ভাত,
থাকিনা ক'দিন বাড়ি বসে,
তোমার হাতে রাখি হাত।
একবেলার ভাত দু'বেলাতে
খাবো নাহয় করে ভাগ,
ঊনূন তো তাও জ্বলছে না-কি?
একেবারেই নয়তো খাক।
সামনে আসছে ঈদুল ফিতর
করতে হবে মার্কেটিং,
না যাব না মোটেও সেথা
হতে পারে কেসফিটিং।
গয়না কাপড় কিনতে গিয়ে
পড়বোনা যে গলায় ফাঁস,
হাঁচি কাশি থুথু লেগে
হতে পারে সর্বনাশ।
ছেঁড়া-ফাঁটা যা-যা আছে
থাকনা খুশি ঐ নিয়ে,
করোনা গেলে কিনবো আবার
অন্য কোন দিন গিয়ে।
হাতে যে নেই টাকাকড়ি
হয়তো ভাবছো করবে ঋন,
থাকছে যারা পথেঘাটে
তাদেরও কিন্তু কাটছে দিন।
আছে তো তোর বাক্সভরা
ওদের কিন্তু তা-ও নাই,
যা আছে তাই নিয়ে খুশি
আছে ওরা হামেশা-ই!
বেঁচে থাকলে করবো আরো
শতেক ঈদের আনন্দ,
একটা সাদামাটাই হলো
তাতে এমন কি মন্দ?

Post a Comment

মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।

Previous Post Next Post

আপনিও লেখুন বর্ণপ্রপাতে

ছড়া-কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ( শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, দর্শন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও প্রবন্ধ), উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, গ্রন্থ ও সাহিত্য পত্রিকার আলোচনা ও সমালোচনা, চিঠি, সাহিত্যের খবর, ফটোগ্রাফি, চিত্রকলা, ভিডিও ইত্যাদি পাঠাতে পারবেন। ইমেইল bornopropat@gmail.com বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।