আমি বীরঙ্গনা হতে চাইনি, ঘুঙুরের ছন্দে নাচতে চাই;
রক্ষিতা নয়, খঞ্জনা পাখির সুরে
তোমার প্রিয়তমা।
মধুচন্দ্রিমার জ্যোৎস্নাজলে নিজেকে ধৌত করি,
মাখনের বিছানায় আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধতে চাই
তোমায় রজনীর পাশে অহর্নিশ।
বুকের পাঁজর ভেঙে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ,
ফুসফুসে জং
স্বপ্নের দেওয়ালে ভাঙন।
তুমি ও তোমার কথারা জীবাশ্মে বুঁদ হয়ে থাকে,
প্রেমহীন বসন্ত শ্যাওলার পঙ্কিলতায় জরাজীর্ণ
আলুথালু অভিমান; বেদনার পোশাকে কম্পন।
রজনী আজ স্তব্ধ, হতবাক! ফ্যালফ্যালিয়ে দেখে
তুমি নামক নীলাক্ত পৃথিবী,
বেজে ওঠে ছেঁড়া একতারা!
স্তুপীকৃত অর্থহীন ভাবনারা মিশে উজানের স্রোতে
ছেঁড়া পাণ্ডুলিপির পরনে প্রেম।
কুঁজো হয়ে খুঁজে শতবর্ষের কর্দমাক্ত ইতিহাস,
প্রতীক্ষার আঁচল ঝাপসা হয়ে দাঁড়ায় উত্তপ্ত বালুচরে।
তোমার মুখে শোনা বীরাঙ্গনা শব্দে
জ্বলন্ত মনের মলাট পুড়ে ছাই!
ক্ষুধার্ত দেহের দুরন্ত পিপাসা মেটাতে পারেনি অন্তঃপুরের তৃপ্তি,
ঘৃণিত আবেগ পুরনো ক্ষতের বিরতিকরণ
দুস্তর সমুদ্র ঘুমন্ত বিছানার বক্ষে খুঁজে তৃপ্তির দীর্ঘশ্বাস।
জীবনটা আজ বড্ড বেরঙিন মনে হয়
বিশ্বাসঘাতকতার ঘেরাটোপের আহ্বানে।
হাজার যোজন দূরত্বে আজ তোমার -আমার সম্পর্কের সীমানা,
রূপের জৌলুসে পতন যে অবশ্যাম্ভবী এ আমি কাকে বোঝাই?
অহংকারী মন অহর্ণিশি নিজের আভিজাত্যের বড়াই করে,
গোবরে যে পদ্ম ফোটে গিরগিটির মতো
রঙ বদলানো মানুষকে বোঝানো যে দুস্কর সম্পর্ক ঢেকে
মাকাল ফলের মতো রিক্ততার খোলসে।
তবু প্রেম জাগে, পুরনো ক্ষতবিক্ষত মরচে পড়া হৃদয়ের কোণে।
আসরূপা মল্লিক এষা
জন্মঃ ২০ই নভেম্বর ১৯৯২ সালে,
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায়। পেশাঃশিক্ষকতা।