সবুজ শ্যামল প্রকৃতি বাংলা মায়ের দান,
মর্তের সবুজ ঘাসের ঘ্রান মনে জাগায় শিহরণ।
স্মৃতিমধুর মায়া মাখা আঁকা বাঁকা বহু পথ,
দুপাশে তার ঘাসফুলেদের সাজানো স্বর্গোদ্যান।
ছোট্ট দুর্বা যেন শীতলপাটি,কোমলমতি মাঠ তার আরো পরিপাটি।
গ্রামের মেঠো পথে হংস রাজের ছুটে চলা,
হাস্যোজ্বল শিশুর নিষ্পাপ মুখচ্ছবি।
ভোরের লগ্নে কচি ধানের পাতার ডগায়
শিশিরে ফুল ফোঁটায় রবি।
গাছে দোল খাচ্ছে জবাফুল,ঝিঁঝিঁ পোকার কলতানে মুখরিত রাস্তার দুকুল,
কোথাও কাঠের পোল তার নিচে বয়ে চলা অবিরাম জলের ধারাপাত মৃদুল।
বাড়ির ধারের সান বাঁধানো পুকুরঘাট,সবই যেন শিল্পীর তুলির আঁকা ছবি,
বেপরোয়া মনে নিজে আনমনে ঘাসের গন্ধে সানন্দে তাই কাব্য লেখে কবি।
ডাহুক, চড়ুই, ময়না, টিয়া, তিতির, কোকিল, তোতা....
গাইছে অবিরাম গান তব কন্ঠে ধরায় আনিছে প্রাণ।
ঘাসফুলের গন্ধমাখা মৃদুমন্দ দখিণা হাওয়া....
আম্রকুঞ্জে অলির গুণগুণ আর বাহারী নদীর কলতান।
ক্লান্তিহীনভাবে তারা নিরবে সর্বকাল ব্যাপীয়া শুনাচ্ছে কথকতা।
পাকা ধানের পাতার সোনালি ঘ্রানে মন সবার মেতে ওঠে,
কৃষক ভাই সকালে তাই কাস্তে হাতে দলবন্দি হয়ে ছোটে।
কাটিবে ধান গাহিয়া গান ভর করিয়া নিজ মন প্রাণ,
আনবে ফসল ঘরে,,গৃহবধূর বেদনা বিধূর মন তাতেই নিবে কেঁড়ে।
ভেজা-ভেজা পথ, ভেজা ধূলিমাখা কণা,,ঝিরিঝিরি হাওয়ায় শিশিরে ভেজা ঘাস থরথর ওঠে কাঁপিয়া।
মেহগনি, জারুলের স্ফীত লালচে পাতা,
শীতের উষ্ণতায় ঝরে পড়ে থাকিয়া থাকিয়া।
ঝরা পাতার বিছানো নরম গালিচা প্রশান্তি বয়ে চলে,
হলদে ডানার হলুদ পাখিটি নিঃশব্দে ওড়ে ডালে ডালে।
কোথাও সবুজ ঘাসের গালিচায়,কোথাও বট বৃক্ষ বা বিশাল তরুছায়,
বসিয়া তরুণী বুনছে নকশি কাঁথা স্বপ্ন এঁকে দিচ্ছে হেথায়।
ভোরের হাওয়ায় দোয়েল কোয়েলের সূরেলা ছোয়ায় মায়ের বদন খোলে,
কিশোর কিশোরীর মসজিদে মন্দিরে চলা মিষ্টি মধুর কথা বলা একই ছায়াতলে।
বিকেলের সোনারঙা মিষ্টি রোদ্দুর গোঁধূলীর ছায়া বিলায়,
সাদা বকেরা বাসায় চলে, কৃষক ছুটে চলে লাঙ্গল কাঁধে ফেলে, গোঁধূলীর রক্তিম আভায়।
মুগ্ধতায় চোখ মুদিয়ে আসে বাংলা গাঁয়ের নৈসর্গিক এ মায়ায়।