বৈশাখের পুথি ।। আবু রায়হান

 


বন্দনা করি

বন্দনা করি নর‐নারী বাংলাভাষী গন

বৈশাখ মাসে নতুন বেশে পুঁথির আগমন

শোনেন দিয়া মন 

শোনেন দিয়া মন সর্বজন উচ্চ কিংবা নীচু 

বৈশাখ মাসের নাম-মাহাত্ম্য বয়ান করি কিছু

আমি বলব কি আর

আমি বলব কি আর পর সমাচার বিদ্যুৎ আসে যায়

ভ্যাপসা গরম মশার কামড় প্রাণ যে রাখা দায়

শোনেন পানির হালচাল

শোনেন পানির হালচাল সকাল বিকাল ট্যাপে পানি নাই

এই না দেশে এলো কেঁশে বৈশাখ আসে ভাই


এলো পয়লা বৈশাখ

এলো পয়লা বৈশাখ মাসের হিসাব বাংলা বছর শুরু

সাথে আসে কালবৈশাখি পরাণ দুরুদুরু

ভাঙ্গে গাছপালা

ভাঙ্গে গাছপালা নদীনালা ভাঙ্গে ঘরবাড়ি

সুধীজন কয় কিসেরও ভয় ঝড় দরকারী

তারপর উঠে হেসে

তারপর উঠে হেসে ঝড়ের শেষে সূয্যিমামার মুখ

আম কুড়ানো পাড়া বেড়ানো ছোটাছুটির সুখ

হাতে নিয়ে ঝাকা

হাতে নিয়ে ঝাকা কাঁচাপাকা আমড়া কদবেল

বাপদাদার নাম ভুইল্যা যাইবা মাথায় পড়লে বেল

ওরে বাপরে বাপ

ওরে বাপরে বাপ কর মাফ তুমি মাসের রাজা 

বৈশাখ এলে হেলেদুলে বাজা ঢোলক বাজা

বসে ফুলের মেলা

বসে ফুলের মেলা রঙের খেলা সাজের ছড়াছড়ি

লাল শাড়িতে যায় যুবতী এদের ওদের বাড়ি

দেখো শাড়ির বাহার 

দেখো শাড়ির বাহার কত নাম তার শিফন বেনারসী

সোনার অঙ্গে ঝিলিক মারে পূর্ণ রাতের শশী

শুভ হালখাতা

শুভ হালখাতা হিসেবের খাতা খোলেন মহাজন

সারাবছর বাকির লেনদেন এবার ছাড়ো পন


আসে পাওনার চিঠি

আসে পাওনার চিঠি চলো ছুটি মহাজনের ঘর

মিঠাই মন্ডা গুড়ের জিলাপি বানায় কারিগর

যত খাইতে পারো

যত খাইতে পারো ঋণশোধ করো এদিন দিলে ফাঁকি

পরের সব মাস হায় সর্বনাশ পাইবে না আর বাকি


রাত্রি হলে ভোর

রাত্রি হলে ভোর আউস ধানের মোটা চালের পান্তা

চুলায় পোড়া শুকনো মরিচ লাল আলুর ভর্তা

সাথে ইলিশ ভাজা

সাথে ইলিশ ভাজা পদ্মার তাজা যদি পাওয়া যায়

কুঁচো চিংড়ি উচ্ছে ভাজা লোভ সামলানো দায়

হায়রে পরান কান্দে

হায়রে পরান কান্দে পড়ি ফান্দে জীবন যাঁতাকল

ঘুড়ি ওড়ানোর দিনগুলি আজ কোথায় গেল বল


দস্যি ছেলের দল

দস্যি ছেলের দল মাঠে চল নানা রঙের ঘুড়ি

নাটাই হাতে বন্ধুর সাথে টিনের কৌটায় মুড়ি

আছে বৈশাখ মেলা

আছে বৈশাখ মেলা সারাবেলা মেলায় মেলায় ঘোরা

পায়ের আলতা কাঁচের চুড়ি বাঁশের বেতের মোড়া

ছিল নাগরদোলা

ছিল নাগরদোলা যায় কি ভোলা উত্তেজনার ক্ষণ

মেলা ফেলে বাড়ি ফিরতে চায়না কিশোর মন

আমার স্মৃতির বৈশাখ

আমার স্মৃতির বৈশাখ থাক্ ওরে থাক্ হৃদয় মন জুড়ে

সামনের বছর দেখা হবে ঋতুচক্র ঘুরে


পুঁথির মুল ধারণা

পুঁথির মূল ধারণা বলতে মানা মমতাজউদ্দীন স্যার

বৈশাখ মাসে এক বিদেশে আদেশে তাহার

হাতে কলম নিয়া

হাতে কলম নিয়া যায় লিখিয়া লেখক রায়হান

সময় স্বল্প বুদ্ধি অল্প তবু জান কোরবান


পুঁথি হইল শেষ

পুঁথি হইল শেষ হে সমাবেশ দর্শক শ্রোতাগণ

আপনাদের চরণে আমার আকুল আবেদন


এই সোনার দেশে

এই সোনার দেশে হেসে খেলে থাকবো ভাই ভাই

এই মিনতি করিয়া আদাব ছালাম জানাই

আদাব ছালাম জানাই।

Post a Comment

মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।

Previous Post Next Post

আপনিও লেখুন বর্ণপ্রপাতে

ছড়া-কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ( শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, দর্শন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও প্রবন্ধ), উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, গ্রন্থ ও সাহিত্য পত্রিকার আলোচনা ও সমালোচনা, চিঠি, সাহিত্যের খবর, ফটোগ্রাফি, চিত্রকলা, ভিডিও ইত্যাদি পাঠাতে পারবেন। ইমেইল bornopropat@gmail.com বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।