রাস্তার দুপাশে পাতা শূন্য গাছগুলোতে ফুটে থাকা লাল টকটকে শিমুল ফুল গুলো জানান দিচ্ছে বসন্ত এসে গেছে। ছোট বেলায় এই শিমুল ফুল কুড়িয়ে মাঝের অংশ দিয়ে খেলনা লিপস্টিক বানিয়ে কতই না খেলা করেছে, এ কথা মনে পড়তেই মুচকি হেসে ওঠে সামিয়া। সামিয়া আর লিয়নকে বহন করা গাড়িটি আঁকাবাঁকা পথে ছুটে চলেছে ময়মনসিংহের গফুরগাওঁয়ের পথে। শহুরে ভাগনে ভাগনির আগমন উপলক্ষে বাড়ীতে অন্যরকম আমেজ বইছে। নানাবাড়ি পৌঁছে ফ্রেশ হয়ে, খেয়ে রেস্ট নিতে যায় দুজন।
পরন্ত বিকেলে মামাতো বোন রুনুর ডাকে ঘুম ভাঙে সামিয়ার। ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় এসে দেখে লিয়ন বসে লাবীব, শাহীনদের সাথে আড্ডা মারছে। মামী চা দিয়ে যেতেই, ছোট মামা এসে জমিয়ে গল্প শুরু করে দেয়। হঠাৎ করেই লাবীব বাবার কাছে টাকা চেয়ে বসে। রাত পোহালেই যে একুশে ফেব্রুয়ারি। ফুলের বেড়ী কিনতে হবে তো। হঠাৎ ভাগনে ভাগনীর সাথে একুশের স্মৃতি মনে পড়ে যায় ছোটমামার। বলেন, আমরা রাত জেগে ফুল চুরি করে এনে শ্রদ্ধাঞ্জলী বানাতাম। মনে আছে লিয়ন, "সেবার মিয়াবাড়িতে ফুল চুরি করার সময় তুই প্রায় ধরা পরে গিয়েছিলি?"
মনে থাকবে না আবার। আর বাড়িতে এসে বিচার দেওয়ায় নানু তোমাকে কি বকাটাই না দিয়েছিল। সামিয়া বলে ওঠে, "আর মালা গাথার সময় আমার হাতে সুচ বেঁধে যে কি ব্যাথাটাই না হয়েছিল সেটা বুঝি মনে নেই কারোর?" সবাই হো হো করে হেসে ওঠে।
মামা লাবীবকে টাকা দিয়ে দেয়। পরেরদিন ভোরে তারা সবাই মিলে খালি পায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। সমস্বরে গেয়ে ওঠে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি...।