পৃথিবীটা বড়ই বিচিত্র ।। মুহাম্মদ রাইস উদ্দিন


বিচিত্র এ পৃথিবীতে বিচিত্র সব মানুষ।ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।কেউ দূধ বিক্রি করে মদ পান করে কেউ আবার মদ বিক্রি করে দূধ পান করে।
পত্যেক মানুষ তার নিজস্ব বিস্বাশ ও দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে চিন্তা করে। ধরুন একজন ব্যাক্তি মারা গেছেন বিশবছর পূর্বে বর্তমান সময় যৌক্তিক কারনে তার কবরটিকে স্থানান্তর করার প্রয়োজন হয়েপরলো।দেখা গেল খনন কাজ শেষে লাশটি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেল।রাস্তায় পথচারী যারা ছিলো তারা জানতে পেরে দেখতে এলো।
কিছু সংখ্যক লোক বলছে লোকটি আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের অন্তরগত ছিলেন,কারন তার লাশটি এখনো অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।দ্বিতীয়ত আর একটি দল বলাবলি করছে লোকটি সম্ভবতঃ খুব খারাপ পকৃতির ছিলো,দেখছো না মাটিও তাকে গ্রহণ করেনী!
বুঝতেই পারছেন অজ্ঞতা আর আর্দশিক জ্ঞান না থাকলে যা হয়।সঠিক বিষয় বুঝতে হলে সঠিক কাজটি করতে হবে।এজন্য প্রয়োজন সঠিক ধর্মবিশ্বাস। আর সঠিক বিশ্বাসই সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বিনির্মাণ করে থাকে।কিন্তু মূল বিষয় হলো সঠিক ধর্ম বিশ্বাস ও সঠিক দৃষ্টি ভঙ্গি মুসলমানদের মধ্যে অভাব কেন হয়ে পরলো আজ?
এর কারণ হলো মানুষের মধ্যে দায়িত্ববোধ বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই।সবাই দায়িত্ব মুক্ত থাকতে চান।সবাই স্বার্থী নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত। অন্যের চিন্তায় চিন্তিতো হওয়ার মানুষিকতা উঠে গেছে সমাজ থেকে। অনেকে ভাবে জীবনটার অর্থ হচ্ছে শুধু উপভোগ খাও দাও আর আনন্দো ফুর্তি করো।আষলে কি তাই?আগে জানতাম মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলো পূরণ হলেই মানূষ সূখী।এখন দেখি সূখী হওয়ার জন্য আরও কিছু দরকার।
যেমনঃঅন্ন ,বস্র, বাসস্থান ,শিক্ষা, চিকিৎসা।,এ পাঁচটি মৌলিক চাহিদা ছাড়াও সবচেয়ে অত্যাধিক গুরুত্বপুর্ণ আর একটি যোগ হয়েছে তা হচ্ছে-বিনোদন অর্থাৎ মৌলিক চাহিদা একটা বেড়ে এখন দাড়িয়েছে ছয়টিতে।
মানুষ এখন বিনদোনকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।ডিজিটাল বিশ্বে বিশেষ করে বাংলাদেশের কথাই ধরা যাক।
কর্মমূখর পৃথিবিতে কর্ম বিমূখ মানুষের সংখ্যা্ই বেশি।কর্মবিমূখ মানুষেরা বিনোদন প্রিয় হয়ে থাকে।
• বিনোদনের মাধ্যম গুলি হচ্ছেঃ
1. টিভি চ্যানেল সুমহ
2. মুবাইল ফোন 
3. সামাজিক মাধ্যম সূমহ
মানুষের দৃষ্টি ভঙ্গি বদলেছে যেমনঃ বাড়িতে অন্যকিছু কম হলেও টিভি চাই তার সাথে ঢিসের জন্য ক্যাবল চাই।ছেলে বুড়ো সবাই এখন ভারতীয় চ্যানেল গুলিতে কাজকর্মভুলে ব্যস্তথাকে।কিছুদিন পূর্বে পত্রিকায় একটি কার্টুন দেখেছিলাম একজন মা সিরিয়াল দেখায় এতই মননিবেশ করেছিলেন যে দূধের ফিটার বাচ্চার মূখে না দিয়ে পাছার দিকে ধরে রেখেছেন।
এবার আসুন মুবাইল ফোনের কথা ধরা যাক।এটি বিজ্ঞানের আবদান।মানুষের অভূত কল্যান সাধিত হয় যদি সঠিক ব্যবহার হয়।আর যদি সদব্যবহার না হয় তাহলে সর্বনাশ।
আর তাই হয়েছে।ছোট ছোট ছেলেমেয়েদর হাতে তুলে দেয়াহয়েছে নিজেদের স্বার্থে।অবোধশিশুরা ওটি নিয়ে ব্যস্ত নিজেরা নিজেদের কাজে।এক সময় দেখাগেলো একটু বড় হয়ে Facebook ,YouTube twitter এ একাউন্ট খোলে অসামাজিক কাজে লিপ্তহয়ে পরে।সময়ের গুরত্ব থাকেনা।লেখাপড়ায় অধিক সময় না দিয়ে ওখানেই সময় দেয়।ফলে তাদের দৃষ্টিকোন দৃষ্টিবঙ্গি পালটে যেতে থাকে।ইউরোপীয় ধ্যান ধারনায় নিজেদের গড়তে চায় তখন আর নিজেদের সার্মথ্যের কথা চিন্তা করেনা কল্পনার জগতে ভাসতে থাকে।
ঘরের আসবাবপত্র দেখে রুচি হয়না ঘরের খাবারের প্রতি অনিহা ফাস্ট ফুডের দিকে ঝুকেপরে।পোশাক আষাকেও পরিবর্তণ আসে। ফ্লিম নাটকে যা দেখে সেই রকম না হলে মন ভরেনা অনলাইনে খাবারের অর্ডার পুশাকের অর্ডার ইত্যাদী ইত্যাদী।শুধু কি তাই?
মানুষগুলো হয়ে পরেছে আত্মকেন্দ্রিক।আগে এক বন্ধু আর এক বন্ধুর সাথে দেখা হলে কৌশল বিনিময়ের পর হাতধরে ঘরের ভিতর নিয়ে কত সেবা !আপ্যায়ণ নাকরে যেতে দেওয়া হতোনা। এখন চিন্তাকরে দেখুন একসাথে বসে থাকলেও কেউ কারোদিকে তাকানোর অবশরনেই সবার চোখ যেনো আটকে গেছে মুবাইলে।
আগে আমরা শিশুকালে মাবাবার আদর নানা নানী দাদাদীর স্নেহের পরশে সিক্ত তাকতাম।মুক্তবাতাসে ঘুরেবেড়াতাম মাঠে মনখোল খেলতাম-দাড়িয়াবাধা গুল্লাছুট বউচি,মেয়েরা কুতকুত দড়িখেলায় মেতে থাকতো।শরীর ও মন থাকতো প্রফুল্ল,রোগবেহাত কম হতো।এখন সারাক্ষন মুবাইলে ব্যাস্তথাকায় ছেলেমেয়েদেরকে মনে হয় এরা দিনদিন প্রতিবন্দি হয়ে যাচ্ছে।
মাবাবার কাজে হাতবাটা এখন আর চিন্তাকরা যায়না।নিজের কাজটুকুন করাও নাকী অসম্মানের।মাবাবা অসুস্থ থাকলেও খোজখবর রাখার সময়টুকও নেই তাদের।সমাজটা যাচ্ছে কেথায় একটু চিন্তাকরে দেখুন।
আধুনিকতা ভাল অতি আধুনিকতি ভাল নয়।আজকাল আধুনিকতায় গা ভাসিয়ে চলাফেরা করতে চায় বর্তমান তরুণ তরুণীরা।তারা ভাবে উলঙ্গপনাই আধুনিকতা।পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষন করে বিভিন্নস্টাইলে চলাফেরা করা।দামি পারফিউম ব্যবহার করা দামী পোষাক পড়া যদিও তার পিতা একজন স্বল্পায়ের কৃষক অথবা চাকুরী জিবী।নুন আনতে যাদের পন্তাফুরয়। ইতিহাস এবং কাল প্রমাণ করেছে যে, কথিত আধুনিকতা এমন একটি বিষয়, যার মাধ্যমে মানবজাতিকে ধীরে এবং অতি ধীরে পশুর চেয়েও অসভ্যে পরিণত করেছে এবং দিনের শেষে ওই চরম আধুনিক সভ্যতা খোদায়ী গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। ইতিহাসের দিকে না তাকিয়ে বর্তমানের দিকেই যদি তাকাই, আমেরিকা এবং পাশ্চাত্য জগৎ বর্তমান দুনিয়াতেও দেখতে পাব।বাংলা দেশে দুদিন পর পরই আগুন লাগছে বিভিন্ন স্থাপনায় এগুলি তারই লক্ষন।এজন্য কোন এক মনিষি বলেছেনঃ
দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর,লও যত লৌহ লোষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর হে নব সভ্যতা!
হে নিষ্ঠুর সর্বগ্রাসী,দাও সেই তপোবন পুণ্যচ্ছায়া রাশি গ্লানিহীন দিন গুলি।,সেই সন্ধ্যাস্নান, সেই গোচারণ, সেই শান্ত সামগান, নীবারধান্যের মুষ্টি, বল্কলবসন, মগ্ন হয়ে আত্মমাঝে নিত্য আলোচন মহাতত্ত্বগুলি। পাষাণপিঞ্জরে তব নাহি চাহি নিরাপদে রাজভোগ নব—

আশুলিয়া সাভার ঢাকা। 
১৬/০৪/২০২৩ ইং

Post a Comment

মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।

Previous Post Next Post

আপনিও লেখুন বর্ণপ্রপাতে

ছড়া-কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ ( শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকসাহিত্য, সংগীত, চলচ্চিত্র, দর্শন, ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ, বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা ও প্রবন্ধ), উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনী, গ্রন্থ ও সাহিত্য পত্রিকার আলোচনা ও সমালোচনা, চিঠি, সাহিত্যের খবর, ফটোগ্রাফি, চিত্রকলা, ভিডিও ইত্যাদি পাঠাতে পারবেন। ইমেইল bornopropat@gmail.com বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। ধন্যবাদ।