বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে সকল ধর্মের মানুষ সুখে শান্তিতে একসাথে বসবাস করে। বিভিন্ন ধর্মের নানাবিধ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানও এই দেশে স্বাধীনভাবে পালন বা উদযাপন করা হয়। এখানে সবাই সবার বন্ধু হিসেবে পরিগনিত।
আমাদের দেশে মুসলমানের সংখ্যা বেশি। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত মসজিদে মাইকে আযান দেয়া হয়। এতে কোন অমুসলিম কানে তুলো গুঁজে দেন না।বরং সম্মান করেন এবং আযানের পবিত্রতা বজায় রাখেন। আবার হিন্দুদের খাসার আওয়াজে মুসলিমরাও দরজা বন্ধ করে দেয় না।কিংবা দুর্গাপূজায় ও পূজা আর্চনায় ব্যাঘাত ঘটায় না অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা। এটাই আমাদের শান্তির দেশ।
হয়তো অনেকেই বলবে আমাদের মাতৃভূমিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করে,ক্ষমতার দলাদলি আছে,একশ্রণির উচ্চ বিলাসী শোষক গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে এই স্বাধীন বাংলাদেশকে শেষ করে দেয়ার জন্য। এজন্য কোন ধর্মই দায়ী নয়। বরং ব্যক্তি মানুষের মনুষ্যত্বের অভাবে ও সঠিক শিক্ষা মেধা মননে নিচ্ছে না বলেই এমনতর বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতকিছুর পরেও আমাদের লাল সবুজের পতাকার সম্মান আমরা অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করি।আমরা আমাদের দেশকে খুবই ভালোবাসি। তাই প্রতিটি উৎসবে আনন্দ ভাগাভাগি করি ধনী দরিদ্র আর বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাথে নিয়ে। আনন্দের বার্তা আনায়ন করে যেসব উৎসব, মুসলমানদের ঈদুল ফিতরের উৎসব তার মধ্যে অন্যতম।
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিনটা একদম অন্যরকম ধরা দেয় মানুষের কাছে।খুব আনন্দ ও হৈ-হুল্লোড়ে ভরপুর থাকে ঈদের দিনটি। তখন মনে কষ্ট না আসে মতো আমরা যথাসাধ্য পরিবার,আত্মীয়-স্বজন ও গরীব দুঃখীদের কাপড় চোপড়, খাবার দাবার এবং আর্থিক সহায়তা করি। এতে অন্তরের তৃপ্ততা আসে বহুগুণে। দরিদ্র মানুষের দিকে বেশি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ এমনও কিছু পরিবার আছে যাদের উপার্জন করার মতো কোন রুজির পথ নেই।
মনে রাখতে হবে কেউ গরীব হয়ে জন্মায় না। সময় ও পরিস্থিতি মানুষকে একেক পরিচয়ে নিয়ে যায়।যা মানুষ হিসেবে আমাদের সমান চোখে দেখা উচিত। আজ যে ধনী,কাল সে হত দরিদ্র হবে না তার কী গ্যারান্টি আছে? কখন, কোথায় এবং কার হাতে পড়তে হয় মানুষকে তাই যার যেমন সামর্থ্য আছে তা দিয়েই অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো উচিত। লোকদেখানো সেবা কখনোই দেব না আমরা। একটা উপহার দিয়ে তা সেলফি তুলে স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচার করা থেকে বিরত থাকব। দান করতে হয় গোপনে। তাতে অনেক নেকী ও বরকত আছে।
আসুন,আমরা ঈদে সকল মান অভিমান ভুলে একে অন্যকে বুকে টেনে নিই। আমরা সবার মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেই দায়িত্ব পালন,ভালোবাসা ও মায়া দিয়ে। পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনটাকে উপভোগ করুন পরকে আপন করে, হাসিমুখে বুকে জড়িয়ে নিয়ে। তবেই হবে মানুষের মাঝে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার রোজার দীর্ঘ একমাসের ত্যাগ সহমর্মিতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।