অদৃশ্য করোনা পৃথিবীকে সমূলে দখলে নিয়েছে, আমরা বৈশ্বিক এক স্লোগান ধারণ করে বলছি-
'ঘরে আছি ঘরে থাকুন'
জানা নেই কতদিন আমরা ঘরে থাকবো
কতদিন লগ ডাউন, সমাজিক দুরত্ব মেনে
মুখ ঢেকে মুখোশ পড়বো।
কতদিন হাওরে যাবো না বলো
কতদিন ফুল পাখি সবুজ মাঠ দেখবো না
মন চাইলেও তোমাকে বলতে পারবো না
প্রিয়তমা মায়াকানন এসো।
বিগত বিস্ময় আর বিতর্কের জন্মদিয়ে সেই তো কতদিন আগে এসেছিলে-
তখন পথে পথে পরিবহন ছিল, নগর কোলাহল
কারখানা চলছিল, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিফর্ম পড়া বালক বালিকারা জলে ফোটা পদ্মের মতো ফুটেছিল।
সে কবে থেকে নিভে আছে রোস্তরা, পাড়ার
চটপটির টং ঘরটিও এখনো দেয়াল ঘেষে নির্বিকার
ঘরে ফিরে গেছে যে যার
ফেরারি আসামীর মতো
পালায়ন পর মানুষের মতো
জেলখানার কয়েদির মতো
খাঁচায় বন্দী পাখীর মতো
একুরিয়ামের মাছের মতো
চিরিয়াখানার জন্তুর মতো ছটফট!
সমগ্র শহর জুড়েই দুর্গত শিবির
এম্বুলেন্সের মুমূর্ষু কান্না–
বিষন্ন বারান্দায়, করুণ জানালায়
মুক্তির উপহাস!
কোথাও কেউ নেই
জনঅরণ্য আজ মৃত্যুভয়রণ্য
আর্তনাদে চাপা পড়ে গ্যাছে মুক্ত পৃথিবী
কালো ছায়ার মতো উহানের অচলায়তন ছড়িয়ে গ্যাছে প্যারিস, রোম, নিউইয়র্ক সবকটা হিমাদ্রি শহর আফ্রিকা কিংবা আমাজন এন্ট্রাটিকা অথবা সাগর সাহারা অতিক্রম করে নভোচারী পর্যন্ত ছুয়েছে
করোনা মিশাইলের চেও ক্ষীপ্র গতীতে দুনিয়ার সমগ্রই এখন যুগপৎ ছোঁয়াছে!
হাতে হাতে জীবনু ঘাতক
থেমে গ্যাছে স্পর্শ
অবিশ্বাস দীর্ঘ হচ্ছে মানুষের
বন্ধনের মানবিক হাত।
দুরত্ব মেনে গুরুত্বহীন গোপন অভিসার, হারাবার বেদনার ভারী বাতাস! আকাশ মাটির মতো ব্যবদান উঠেছে বোহেমিয়ান পৃথিবীর জোস্না তারা।
আজ আমরা
মাঠে নেই, ঘাটে নেই,
পথে নেই, শিক্ষালয়-বেশ্যালয়
পান কিংবা ধর্মশালা
মন্দির অথবা মসজিদ,
অফিস, উদ্যান
লোকসভা–শোক সভা
শপিং, সিনেমা
থিয়েটার, অপেরা, কফিশপ
রাজপথ বিরান কারফিউ!
আমাদের সীমাবদ্ধতার কাছে আমরা নতজানু
জলে ডোবা নুনের মতো ক্রমাগত গলে যাচ্ছি,
শামুকের মতো গুটিয়ে রেখেছি কপাট।
আলিঙ্গন নিরপেক্ষ বিপন্নতাই যেনো
আমাদের একমাত্র বেঁচে যাওয়ার পথ।
কবে পৃথিবী সবুজ হবে
জরা জয় করে মানুষ দাঁড়াবে?